পেত্নীর সাথে ঘর সংসার (সিজন ২) পর্ব ৩য়

-কি আর বলবো ভেবে পাচ্ছি না একদিকে আমার প্যান্টের অবস্থা খারাপ ট্যাংকি পাঞ্চার হইয়া মাখামাখি অবস্থায় আছে আর এই দিকে পেত্নীর অপয়্যা ভালোবাসার ফাদ 😭 মনে হচ্ছে নরকের বর্ডারে আছি।

কি আর বলবো খান্দানী জামাই বলে আরোও একটু ভিজিয়ে দিলো আমায়, না করতে পারলাম না 😂🤣।

হঠাৎ মনে পইড়া গেলো হায় হায় আমার  মানুষ বউটা তো পপকল থুক্কু পপকর্ণ নিয়া যাইতে বলছে। হাত ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে দেখলাম সিনেমা শেষ হতে আর মাত্র ১৫ বাকি আছে আর যা করার এখুনি করতে হবে। 

পেত্নী বউয়ের কাছে আরেকবার শেষ চেষ্টা করা যায় কি না দেখি।

পেত্নী বউকে বললাম হ্যাগো শোনো না যদি এখুনি তাড়াহুড়ো করে যাই শশুর বাড়ি তাহলে তো সবার সাথে সময় দিতে দিতে তোমাকে আর সময় দেয়া হবে না। 

--কি বললা তুমি আমায় তুমি সময় দিতে পারবা না?

-- ও বউ রাগ করে না,, একটু বুঝার চেষ্টা করো।  তুমি তো আমার সুবুদ্ধিমান থুক্কু সুবুদ্ধীমতি সোনা বউ তোমারে কি সময় না দিয়ে পারি বলো। তাছাড়া তুমি বলো আমি এতো দিন পর তোমাদের বাড়ি যাবো মানে মানচিত্র মার্কা শশুরের বাড়ি যাবো। আর সেখানে গিয়ে যদি শুধু তোমার পিছে পিছে ঘুড়ি তাইলে তো সবাই আমায় অন্য চোখে দেখবে। তার থেকে আমি বলছিলাম কি বউ তুমি যদি এখানে দুই দিন থেকে যাও তাহলে এখানে বসে তোমায় নিয়ে একটু ঘুড়াঘুড়ি করতে পারতাম আর কি। 

-- পেত্নী বউ কিছু একটা ভেবে বলল আচ্ছা তাইলে তাই হবে। তবে হ্যা আমি কিন্তু মাত্র দুইদিন থাকবো তারপর তোমায় আমি সাথে নিয়া যামু তখন যেনো কোনো কথা কইতে পারবা না। 

-- আচ্ছা আচ্ছা বউ তাইলে তাই হবে।

-- চলো তাহলে শশুর বাড়ি। 

-- আমি বললাম ওই ওই কি বললা এই মাত্র তো বললাম শশুর বাড়ি দুইদিন পরে যাবো আর এখন আবার শশুর বাড়ির কথা বলতেছো কেনো। 

-- পেত্নী বউ বলল এই কি তুমি খানদানি পোলা,, বুদ্ধি কি হাটুতে নাইমা গ্যাছে নাকি 🙄। 

-- বউ তুমি কিন্তু আমায় রীতিমতো অপমান করে কথা বলতেছো,। 

-- আরে বাপু অপমান করবো না তো কি করবো,,  তুমি কি ভাবো তোমার একারই শশুর বাড়ি আছে?  আমার নাই? 

-- আমি একটু গম্ভীর ভাব নিয়া বললাম ওহো বুঝছি তুমি আমায় উপড়ে উপড়ে হুমকি দুমকি দাও আর তুমি তলে তলে অন্য শশুর বাড়ি বানিয়ে নিছো তাই না।

-- ওই তুমি আমায় কি ভাবো হুম,, আমাদেরোও কিন্তু একটা ভূ-সম্মান বলে কিছু একটা আছে হুম্ম 🤔 আমি তোমার বাড়ি মানে আমার শশুর বাড়ি যাওয়ার কথা বলছি। 

--আমি অবাক হয়ে বউকে জিজ্ঞেস করলাম সবি না হয় বুঝলাম তাইলে তোমাদের এই ভূ-সম্মান টার মানে কি। 🙄

-- বউ বলল ওরে আমার খান্দানী জামাইরে,,, তোমাদের মানুষের যেমন মান সম্মান আছে,, আর আমাদের ভুতদের জন্যও ভূ-সম্মান আছে হুম।

-- ও বাবাগো বাবা ভূতের আবার ভূ-সম্মান 😂 তাইলে তোমার বাবা মানে আমার ন্যাংটা শশুরের ভূ-সম্মান কোথায় গেলো?  নাকি তার ভূ-সম্মান চুষে খাইয়া ফেলছে? 🙄

-- বউ বলল এবার কিন্তু সত্যি সত্যি কান্না করে দিমু বাবার নামে কিছু বললে  আবার 🤢

-- আমি মনে মনে বললাম ভূতদের কান্না শুনলে একটুও কস্ট হবে না তবে খুব বেশি বিরক্তি লাগবে এবং যার  অতীতের অভিজ্ঞতা আমার আছে। 

(ভূতেরা কু কু কু কু কু করে কাদে চাইলে আপনিও শুনতে পারেন 🙄 এবার দয়া করে বলবেন না যেনো ভূতদের ঠিকানা টা দিতে।) 

-- আচ্ছা আর কাদতে হবে না,, এবার আমি যাই কেমন কাল আবার দেখা হবে। 

-- ওই আমারর রাইখা কোথায় যাবা হুম। 

-- কেনো আমি আমার বাড়িতে যামু। 

-- বউ বলল তাইলে আমি কোথায় যাবো 🥺

--তুমি তো পেত্নী তুমি যে কোনো জায়গায় তো থাকতে পারো চাইলে তুমি গাছের যেকোনো একটা ডালে ঝুলে ঝুলে থাকতে পারো। 

-- তুমি এইটা বলতে পারলা 🙄 আমি কি তোমায় বিয়ে করেছি গাছের ডালে থাকবার জন্য। যদিও তা না হয় মানলাম তবে তোমার ছেলে প্যাপুর কথা একটু চিন্তা করলা না,, ছেলেটা গাছের ডালে কিভাবে থাকবে বলো। 

-- হুম এই প্যাপুটাই তো এখন একমাত্র আপদ । 

-- ওই ওই তুমি কি বললা। 

-- আরে না না আমি তেমন কিছু বলিনি শুধু বলেছি এই প্যাপুকে ডালে ঝুলিয়ে রাখাটা খুব বিপদ। 

-- হুম সেটাই তো তোমায় বললাম। 

-- মনে মনে বললাম কি বিপদ আর ওই আপদটার,, যা বিপদ তো আমার ঘাড়ে চেপে বসে আছে। 

-- কিগো চুপ করে আছো কেনো?

-- আমি বললাম বউ শশুর বাড়ি যাইবা ভালো কথা তবে একটা শর্ত আছে। 

তুমি আমার সাথে আমাদের বাড়িতে ঢুকতে পারবা না। 

--বাড়িতে ঢুকতে পারবো না মানে কি,,?

-- না মানে আমাদের বাড়িতে এক ভাবী এসেছে সেই ভাবী ভূতকে খুব ভয় পায় আর যদি সে তোমায় দেখে তাহলে সে নিজেকে ঠিক রাখতে পারবে না। 

-- তার মানে আমি অনেক খারাপ দেখতে তাই না,, তাহলে এতদিন তুমি আমায় মিথ্যা মিথ্যা বলছো আমি সুন্দরী আর কিউট পেত্নী 😢। 

-- ও বউ মিথ্যা হবে কেনো,, সত্যি তুমি খুব কিউট একটা পেত্নী। তবে আমার চোখ তো আর ভাবীর নাই, তাই সে উল্টো পাল্টা দেখবে আর ভয় পাবে।

-- বউ কিছু একটা ভেবে বলল আচ্ছা তাহলে তাই হবে। 

-- আমি বললাম আমি বাড়িতে ঢুকার  কিছুটা সময় পর তুমি আমাদের বাড়ি ঢুকবা।  কথাটা শোনার পর পরই পেত্নী বউটা কাইল্লা পাতিল টা নিয়া থুক্কু প্যাপুকে নিয়া প্রস্থান করলো।

হয়তো অভিমান করছে........

 হঠাৎ সামনের দিকে চোখ ফিরাতেই দেখি,, আমার মনুষ্য পরিবারের তিনজন এই দিকেই হেটে আসতেছে। মানে আমার বড় মেয়ে, আমার বউ আর বউয়ের পেটের বাচ্চা মিলিয়ে তিনজন। 

এক আপদ বিদায় দিয়ে আরেক বিপদের সম্মুখীন হচ্ছি। 

চলবে........ 

 

পেত্নীর সাথে ঘর সংসার (সিজন ২) পর্ব ২য়

সিনেমা হল থেকে বের হয়ে একটু সাইডে গিয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে দাড়ালাম ট্যাংকি ফুল লোডে আছে।।। 

প্যান্টের চেইন খুলতেছি আর মনে মনে বির বির করে বলতেছি হালার কোন যুগ আইলোরে।। 

আগে সিনেমা হলে ঢুকতাম মুড়ি আর নারিকেলের আইচা নিয়া। আর এখন কিনা ভুট্টার খৈ লাগবে🙄  তার আবার নাম রাখা হইছে পপকল আরে ধুর থুক্কু পপকর্ণ।

একটু পরে.....

কথা দিছিলা আর বিয়া করবা না,, আমারেই নাকি ভালোবাসবা সারাজীবন, এই জন্যই কি আমি তোমাকে ছেড়ে চলে এসেছি ?

আমি পিছন থেকে এইসব কথা শুনে চেইনটা উপড়ে টেনে ঘুরে দাড়ালাম,, 

😱এ,,মা,,  এ তো দেখছি আরেকটা পুরোনো আপদ এসে হাজির হইছে। 😭

আমি ধরেই নিয়েছি এবার আর রক্ষে নেই, ঘার মটকে  ছাড়বে।

এখনো হা করে পড়তেছেন আর ভাবতেছেন আমার ঘাড় মটকাবে কে তাই না,,🤔

আরে ভাই এই সেই আপদটা যাকে আমি গত জন্মে থুক্কু কুড়ি বছর আগে এই পেত্নী টারে বিয়া করেছিলাম। 🥵

আমার মুখ থেকে কোনো কথা বের হচ্ছে না, তল পেটের নিচে ট্যাংকিটা চেপে ধরে রেখেছি শক্ত করে কারন হিসিটা পুরোপুরি করার আগে সিগ্ন্যাল পড়ে গেছে 😥...

আমি খানদানি পোলা বলে কথা ট্রাফিক সিগন্যাল তো মেনে চলতেই হবে।

এই অনুভুতিটা একমাত্র সেই বুঝবেন যে কোনো না কোনো কারনে এমন সিগ্ন্যাল এর সম্মুখীন হয়েছেন।

যাক গে ছাড়ুন ওই কথা,,, 

কিরে তোর মুখ থেকে বুলি বেরোচ্ছে না কেনো,? তুই না খানদানি পোলা তাইলে এমন সিধা হইয়া মুন্ডি চেপে দাড়িয়ে আছিস কেনো........😌🥴

আমি বললাম বো বো বো  বউগো আমি তোমারে এতোটা দিন খুবি মিস করেছি তাই তো এই কুড়িটা বছর ধরে এই সিনেমা হলের সামনে এসে অপেক্ষা করি কবে তোমার এই সুন্দর মুখ খানা দেখতে পাবো 🥵... (মনে মনে বললাম সুন্দর না ছাই)

আমার কথা শেষ হতে না হতেই,, চোখ দুটো তালের আঁটির মতো করে পেত্নী বউটা আমায় বলল,, তোমার লজ্জা করল না এমন মিথ্যা কথা বলতে? 

সাথেসাথে লজ্জা পেয়েছি এমন ভাব দেখানোর জন্য আমি আমার মুন্ডিটা থুক্কু ট্যাংকিটা ছেড়ে দুই হাত দিয়ে নিজের মুখখানা চাপিয়া ধরিয়াছি, আরে ধ্যাত্তেরিকা বেশি কবি কবি ভাব হইয়া গেলো 🙄 না মানে চেপে ধরছি।

কিন্তু এ"মা এতো দেখছি এখন সর্বনাশ হইয়া গেলো,,😭 নিজের গাড়ির বাকি রাখা পেট্রল নিজের প্যান্টেই লিক করে দিয়েছি। একদম মাখামাখি অবস্থা তা না দেখে বুঝতে পারবেন না। আর হ্যা ভুলেও আবার দেখতে চাইয়েন না,,, পেত্নি বউটা আমায় যা ইচ্ছাই বলুক না কেনো আমার কিন্তু লজ্জা বলে কিছু একটা আছে।

 পেত্নিটা থুক্কু পেত্নী বউটা বলল আমায়  হ্যাগো শোনো না দেখোতো কাকে আজ নিয়ে এসেছি। 

-- মনেমনে বলতে লাগলাম কি আর করার যা হওয়ার হয়ে গেছে, প্যান্টের নিচের শুষ্ক গরম আভাস টা নিয়ে মুখ থেকে দুই হাত সড়িয়ে তাকালাম পেত্নিটার দিকে,,থুক্কু বউটার দিকে।

প্লিজ আপনারাই এখন ডিসাইড করে দেন আমি এখন তারে কি ডাকবো বউ নাকি পেত্নি 😰

তাকিয়ে দেখলাম তার বগলের মাঝখান দিয়ে কি যেনো একটা কাইল্লা পাতিলের মতো বের করছে।

--আমি বললাম এটা আবার কি আনলা 🙄 ভাবছিলাম অনেক দিন পর দেখা হইছে তো তাই ভালো মন্দ কিছু খাবার আনছে পেত্নি বউটা আমার জন্য।

--এ"মা এতো দেখছি কাইল্লা পাতিলটা হাটতেছে 🙀

-- পেত্নি বউটা বলল এটা তোমার ছেলে গো, নাম প্যাপু🌝 কেনো ভুলে গেছো বুঝি🤔

-- আরে না না ভুলবো কেনো ওরে নিয়া কতইনা চিন্তা করি আমি,, 

--হ্যাগো কি চিন্তা করো ওরে নিয়া। 

--কি বিপদে আছি এক মিথ্যা বলে ঢাকতে গিয়ে আরেক মিথ্যা বলতে হবে , আমি নিশ্চিত হতে পারছিনা নরকেও আমার ঠাই হইবে কিনা।

বললাম ওরে আমি অভিনেতা বানামু আর এই স্বপ্ন নিয়েই আমি বেচে আছি।

-- হ্যাগো তুমি ঠিকি বলছো তোমার বাবার সাথে খুব ভালো অভিনয় করতে পারে তোমার ছেলে।

--সে কি আমার বাবার সাথে কাইল্লাটার থুক্কু প্যাপুর দেখা হলো কিভাবে।

--পেত্নি বউ বলল আরে আমার বাবা,,

--ওহ ন্যাংটা বাবা, থুক্কু মানচিত্র বাবা আরে ধুর শশুর মশাই বাবা।?

--হুম...... 

--সে এখনো বেচে আছে?

--কি অলুক্ষুনে কথা বলছো এই অল্প বয়সে কেউ মরে যায় নাকি। 

--সেকি বুইড়ার অল্প বয়স এখনো 🤔 এই জন্যই তো বলি এতো রস আর এত্তো লুইচ্চামি করে কেমনে। 

--অই উল্টা পাল্টা কথা বলবা না একদম,,, বাবা এখন ছোট মাকে পেয়ে খুব ভালোই আছে।

--ওই ছোট মা মানে 🐈

--বাবা আরেকটা বিয়া করছে.....

--আমি বললাম সেকি এই বু*****

আমার কথা থামিয়ে বলল,, এই শোনো আমার বাবারে একদম বুইড়া বলবা না। 

--আরে ধুর কি যে বলো আমি বুইড়া বলবো কেনো,, বলছিলাম বুদ্ধি আছে তার। আচ্ছা কাকে বিয়া করলো? 

--ওই যে তুমি যার ডিম ফাটাইছিলা।

এবং পরে সে বিচার বসাইছে এবং তখন বাবা বলছে তার ডিম আবার ফেরত দিয়ে দিবে। 

সবাই বলল কিভাবে ফেরৎ দিবে ডিম বাবা সরল মনে বলল তারে আমি বিয়ে করে ডিম ফেরৎ দিয়ে দেবো। 

--ওরে আমার সরল মনরে,, লুইচ্চার কি বুদ্ধি মাইরি 🥴🥴

--ওই একদম বাবারে লুইচ্চা বলবা না 🙄 যা হইছে সব তোমার জন্যই হইছে তুমি ডিম না ভাংলে এমন হইতো না। 

--মনে মনে বললাম হ্যা তা ঠিক কেনো যে গেলাম ডিম ভাংতে। তাই একটু নরম স্বরে বললাম শশুরকে বইলো আমায় ক্ষমা করে দিতে, না বুঝে শুনে ওই ভুত্নিটার ডিম ভাংছি। 

--ওই একদম ভুত্নি বলবা না,, সে আমার ছোট মা মানে তোমার শাশুমা 🙄

--আচ্ছা আচ্ছা,,, বলবো না,, 

তবে এটা বলো আমার শালীকা কেমন আছে? 

-- ওহ এখনো শালীকারে ভুলো নি,, আবার আমার বাবাকে লুইচ্চা বলা হচ্ছে তাই না।

-- আরে না না তোমাদের সবাইকেই খুব মনে পড়ে সব থেকে বেশি মনে পরে এই কাইল্লা প্যাপু কে, 🥵 থুক্কু সোনা প্যাপু কে।  এই বলেই প্যাপু মানে আমার পেত্নির ঘরের ছেলেকে কোলে তুলে নিলাম আর একটু লোক দেখানো আদর দিয়ে বললাম এবার আমি তোমার সাথে যাবো সোনা প্যাপু 😘😘।

--পেত্নি বউয়ের হঠাৎ আমার কথা শুনে চোখ মুখে অন্ধকার নেমে এলো একদম কালো করে রেখেছে মুখটা,,, (আপনারা চাপ নিবেন না, আসলে পেত্নিরা খুব খুশি হলে চোখ মুখ কালো করে ফেলে)

পেত্নি বউটা মনে হচ্ছে আকাশের চাদ হাতে পেয়েছে,, আমায় জড়িয়ে ধরে হ্যাগো তুমি সত্যি যাবে তো🤗, এই না হলে আমার খানদানি জামাই। 

--কি আর বলবো ভেবে পাচ্ছি না একদিকে আমার প্যান্টের অবস্থা খারাপ ট্যাংকি পাঞ্চার হইয়া মাখামাখি অবস্থায় আছে আর এই দিকে পেত্নীর অপয়্যা ভালোবাসার ফাদ 😭 মনে হচ্ছে নরকের বর্ডারে আছি।

কি আর বলবো খান্দানী জামাই বলে আরোও একটু ভিজিয়ে দিলো আমায়, না করতে পারলাম না 😂🤣।

চলবে........

পেত্নীর সাথে ঘর সংসার (সিজন-২)

দেখতে দেখতে ১৫ টি বছর কেটে গেলো,,, এর মাঝে আমি বিয়ে নামক শুভকাজটাও সেরে ফেলেছি।

তবে এই শশুর বাড়িতে গেলে কোনো মানচিত্রের দেখা পাওয়া যায় না। 

বলতে পারেন যে খুব ভালো শশুর পেয়েছি আর বউটা তো অমাইক হইছে শ্যামলার মাঝে গর্জিয়াস লাগে মানব বউটাকে আমার।

এই সংসারে একটা মেয়ে আছে আমার না মানে থুক্কু আমার বউয়ের মেয়ে তার মানে আমাদের দুজনার ভাগের মেয়ে। 

তাছাড়া এই মেয়েটা ছোট্ট শিশু থাকতে কুয়া কুয়া করে কাদে নি। 

খুব লক্ষী মেয়ে পেয়েছি,, শশুর মশাইয়ের শুধু একটাই রোগ "" একটার সোগায় আরেকটা বিড়ি ধরিয়েই যায়"" যাহা আমার সয্য হয়না একটুও।

তবে এই বিয়েতে শালী পাইনাই বলতে পারেন কপাল পোড়া। গতবারে পেত্নী বিয়ে করেও একটা শালী নামক প্রডাক্ট পেয়েছিলাম কিন্তু এইবার মনুষ্যজাতীর মেয়ে বিয়ে করে কোনো শালী নামক প্রডাক্ট ফ্রী পেলাম না,,  মনে বড় কস্ট তবে চেপে রেখে রেখে ১৫ টি বছর কাটিয়ে দিছি।

একদিন ভাবলাম যাই বউটাকে নিয়া একটু সিনেমা দেখে আসি বসন্ত চলছে তো তাই একটু ফিলিংস টাও দারূন লাগছিলো,,,,,,,, 

বউয়ের কাছে প্রস্তাব রাখতেই বউ আমার তিন পায়ে রাজি,,, 

ভাবতেছেন তিন পায়ে রাজি হয় কেমনে,, 

এক পায়ে রাজি আমার বউ, দ্বিতীয় পায়ে রাজি আমার ১৩ বছরের মেয়ে রুজি, আর বউয়ের পেটে একটা প্রডাক্ট  রেখেছি তিন মাস হলো এই সব মিলিয়ে তিন পা।

হাসবেন না একদম বলে দিচ্ছি,,,,, 😂

সন্ধ্যা সন্ধি বেড়িয়ে পড়লাম চারজন সিনেমার উদ্দেশ্যে,, আমি, রুজি, বউ এবং বউয়ের পেটে আমার প্রডাক্ট নিয়ে।

সিনেমা হলটা অনেকটা চেঞ্জ হয়ে গেছে,, সিনেমা হলের সামনে এখন অনেক সুন্দর লাইটিং সিস্টেম করে রেখেছে কতৃপক্ষ। 

দ্বিতীয় বার বিয়ে করে আর কখনো আসা হয়নি সিনেমা হলে,, 

আর পাঠক মনে করে দেখুন এই সেই সিনেমা হলটা যেখানে আমার প্রথম পেত্নীর সাথে বিয়ের পাকা কথা হয়েছিলো। 

তবে এখন এইসব অলুক্ষুনে কথা বলে শিহরিত হতে চাই না। 

 চারটি টিকিট নিয়ে চারজন সিনেমা হলের ভিতরে প্রবেশ করলাম হঠাৎ বউ জিজ্ঞেস করে বসল চারটা টিকেট কেনো কাটলে আমরা তো তিনজন।

এই দেখো আমার বোকা বউটা খানদানী মার্কা জামাই পেয়েও খানদানী বউয়ে রুপান্তরিত হতে পারলো না। 

বউ বলল বুঝেছি বুঝেছি কোন সইয়ের জন্য কেটে রেখেছো তাই, 

তবে তোমার মনে মনে এই ছিলো হুম্ম।

বউয়ের মুখে লাগাম টেনে বললাম....

 বউ তুমি আমারে এতো সন্দেহ করতে পারো না, বিয়ে করার পর আজ ১৫ টি বছর বিবাহিত জীবন কাটিয়ে দিয়েছো একসাথে। 

তারপরও আজ সন্দেহও টা চেপে দিলে আমার ঘাড়ে। 

মনে মনে ভাবলাম বউয়ের আসলে দোষ নাই, যত কুবুদ্ধি আমার মাথায় ঘুর পাক খায়। 

বউকে বুঝিয়ে বললাম শোনো বউ,, 

একটা টিকেট আমার জন্য, একটা টিকেট রুজির জন্য, একটা টিকেট ওগো তোমার জন্য গো,,।

বউ আমার কথা থামিয়ে বলল হ্যা বুঝলাম তবে বাকি টিকিট টা কার জন্য হুম্ম শুনি। 

মুচকি এক খান হাসি মাইরা বউকে কাছে টেনে বললাম বাকি টিকিটটা তোমার পেটে রাখা আমার প্রডাক্টের জন্য.........

বউ কিছুটা লজ্জা পেলেও রাগি গলায় বলল শুধু শুধু টাকা নস্ট করার কোনো মানে হয় হুম্ম।

একটু পকেটে হাত দিয়ে ভাব সাব পাল্টে বললাম শোনো বউ খানদানী পোলা আমি,,, 

আর আমি এখন কারোও কাছে খানদানী জামাই আবার কারোও কাছে খানদানী বাবা হয়ে গেছি। 

তাছাড়া তোমার পেটে রাখা আমার প্রডাক্টটি যখন বাইরে বের হবে তখন তো আমার প্রশ্ন বিদ্ধ করবে,,

বলবে বাবা তুমি আমায় চোরের মত্ণ করে লুকিয়ে লুকিয়ে সিনেমা দেখাতে নিয়ে গেছিলা। 

তাই আমি চাই না কারো কাছে ঋনি থাকি,,,, 

বউ বলল ঋনি থাকবা মানে এখানে আবার ঋনি থাকার প্রশ্ন আসলো কোথা থেকে,। 

আরে বউ বুঝলা না,, 

সবাই জানে আমরা তিনজন এসেছি সিনেমা দেখতে কিন্তু আমি আর তুমিতো জানি আমরা চারজন এসেছি। 

বউ আমার পাছায় একটা কিল মেরে বলল আহারে আমার খানদানি জামাইটারে।।।। 😁😁😁

এই বলে তিনজনে মিলে থুক্কু চারজনে মিলে সিনেমা হলের ভিতরে প্রবেশ করলাম। 

দারুন এক খান ছবি লাগাইছে থিয়েটারে,,, -------------------------

------দেখতে দেখতে মধ্য বিরতী দিয়ে দিয়েছে।

তাই কেউ কেউ তাদের সংগীনিদের জন্য খাবার আনতে বাইরে যাচ্ছে,, 

হঠাৎ বউ আমায় খোচা দিয়ে,,, হ্যাগো শুনছো বাইরে থেকে পপকর্ণ নিয়ে আসো না। 

আমি তো অপাক থুক্কু অবাক বউ আমার কি কইতাছে,,, 

বউকে বললাম ও বউ এই পপকল টা কি আবার হুম 🙄

বউ একটু বিরক্তি নিয়ে বলল,, ওই ওটা পপকল না পপকর্ণ হবে।

আমি বললাম যাই হোক সেটা কি বলবা তো,,,,,,

আহারে আমার খানদানি জামাই পপকর্ণ চিনে না,,, পপকর্ণ হলো ভুট্টার খৈ। 

আমি মনে মনে বললাম ওরে আমার পিছা মারা সয়তান রে,,,, ভুট্টার খৈ বলতে পারে না আবার নাম রাখছে পপকর্ণ ডিজিটালের ঠেলায় আর বাচিনা।

বউরে বললাম তোমরা বসো আমি বাইরে গিয়ে আনতাছি। 

সিনেমা হল থেকে বের হয়ে একটু সাইডে গিয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে দাড়ালাম।।। 

প্যান্টের চেইন খুলতেছি আর মনে মনে বির বির করে বলতেছি হালার কোন যুগ আইলোরে।। 

আগে সিনেমা হলে ঢুকতাম মুড়ি আর নারিকেলের আইচা নিয়া। আর এখন কিনা ভুট্টার খৈ লাগবে তার আবার নাম রাখা হইছে পপকল আরে ধুর থুক্কু পপকর্ণ।

কথা দিছিলা আর বিয়া করবা না,, আমারেই নাকি ভালোবাসবা সারাজীবন, এই জন্যই কি আমি তোমাকে ছেড়ে চলে এসেছি ?

আমি পিছন থেকে এইসব কথা শুনে চেইনটা উপড়ে টেনে ঘুরে দাড়ালাম,, 

😱এ,,মা,,  এ তো দেখছি আরেকটা পুরোনো আপদ এসে হাজির হইছে। 😭

চলবে...........?

#পেত্নীর_সাথে_ঘর_সংসার_অন্তিম_পর্ব

আমি ক্ষনিকের জন্য থ মেরে গেলাম,, মুখ থেকে যেনো আমার কিছুই বেড়োচ্ছে,  যা ভেবে রেখেছিলাম সেটাই ঘটতে চলেছে কি জানি কপালে কি আছে 🤔

বউ কে বললাম হঠাৎ তুমি এখানে কেনো এলে 🙄

বউ বলল কেনো স্বামীর ঘরে আসতে পারমিশন লাগে বুঝি 😐?

না না তা হবে কেনো,  আসলে তুমি বুঝতে পারতেছো না,,, মা, ভাবীরা তোমায় দেখে নিলে খুব কেলেংকারী হয়ে যাবে।

হয়তো এমনোও হতে পারে  আমার মাকে তুমি শাশুড়ী মা ডাকা থেকে বঞ্চিত হতে পারো😴 তারা তোমায় দেখতে পারলে হয়তো মায়ের লাস্ট হার্টএট্যাক হয়ে যেতে পারে ।😥 

বউ বলল সেকি গো, এমন কেনো  বলতেছো। আমি দেখতে কি বিশ্রী নাকি?🙄😣

আমি বললাম না তেমন টা নয় তবে তারা হঠাৎ করে ভূত,পেত্নী দেখলে একটু চমকে উঠতে পারে,,, বুঝোই তো মানুষ বলে কথা। 🧟‍♂

বউ বলল আচ্ছা তোমরা মানুষেরা এতো ভূতদের ভয় করো কেনো,,,😒? 

আমি বললাম 

আমরা মানুষেরা আজকাল ভূত FM শুনি  আর তোমাদের ভূতদের  নিয়ে  অনেক ভয়ানক ভয়ানক গল্প বলে তারা।

তাই সেগুলো শুনে আমরা মানুষেরা তোমাদের ভূত সমাজ নিয়ে অনেকটা আতংকিত থাকি। 🤢

বউ রাগি গলায় হুংকার দিয়ে বলল এই শালার ভূত FM এর রেডিও জোকি কে যদি একবার হাতের কাছে পাই না,, দেখিয়ে দিমু ভূতের কাহিনী কাকে বলে। 😐🤔

হঠাৎ আমি নিচ থেকে মা আর ভাবীর কথা শুনতে পেয়ে পেত্নী বউয়ের হাত টেনে আমার রুমে প্রবেশ  করালাম ( আমার অনিচ্ছা সত্ত্বেও) । ঘরে ঢুকিয়ে দরজাটা এলিয়ে দিয়ে লক মেরে দিলাম।😌😌

মনে হচ্ছে যেনো খাল কেটে কুমির নিয়ে এসেছি ঘরে🙁  

(কি করবো বলুন তো, নদীর এপাড়েও আগুন ওপাড়েও আগুন তার থেকে বরং নদীর মধ্যে কুমিরটার সাথে ভাব করে শেয়ার করা ভালো।) 🌚

হঠাৎ বউ আমকে বলে উঠলো আচ্ছা বাবা কে দেখছি না যে,,,,,,শুনলাম বাবা নাকি তোমার কাছেই থাকে।  জানোতো বাবা কে আমাদের জগৎ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে।।।।🤢

আমি বললাম হ্যা শশুর মশায়  আমায় সব বলেছে,, কিন্তু মনে মনে ভাবতেছি কিভাবে এখন শশুরকে খাটের নিচ থেকে নাকে তুলো দেয়া অবস্থায় বউয়ের সামনে বের করবো। 🤔

বউ বলল জানোতো কতদিন বাবাকে দেখিনা,  অনেক ইচ্ছা করতেছে বাবাকে দেখবো, একটু বাবাকে ডেকে দাও না।😣

হয়তো সে জামাই বাড়ির আদরে আমাদের কথা ভুলেই গেছে।😶😶😶

 

আমি বললাম শশুর মশাইয়ের খুব শরীর খারাপ তো তাই  তাকে একা এক জায়গায় রেখেছি জেনো সে বিরক্ত না হয়। 🤫🤫

বউ বলল কেনো বাবার কি হয়েছে গো 🙄🙄🙄

 রাত দুইটার সময় পেত্নী বউয়ের কথার কৈফিয়ত দিতে আমার ইচ্ছে না থাকা সত্বেও বাধ্য ছেলের মতো একের পর এক উত্তর দিয়েই চলেছি।🤨🙁

বললাম তেমন কিছু না শশুর মশায় চেয়েছিলো আমাদের নায়ক অমিতাভ বচ্চন এর মতো হতে এবং চলচিত্র ফটোগ্রাফেও অংশ নিতেও চাইছে।

কিন্তু শশুরের  নাক বেশি লম্বা হওয়ায় অপারেশন করতে হয়েছে তাই তার বিশ্রাম এর জন্য তাকে এক বাস্তুসংস্থান পরিবেশে রেখে এসেছি। 

কিন্তু বলিনি যে আমি তার বাবাকে আমার খাটের নিচে রেখে দিয়েছি। 🤪🤪🤪

বউ আমার কথা বুঝে নিতে  কস্ট বোধ করেনি মোটেও,,, কারন সেও জানে তার ল্যাংটা ভূত বাবা কতো বড় লুইচ্চা। 🧟‍♂

আমি যদি বলতাম আমার ভাবী তোমার বাবাকে মোরগ ভেবে জবাই করতে গিয়ে নাক টা কেটে দিয়েছে। 🥴

এই কথা শুনলে বউ আমার ভাবীকে কাবাব বানাতে একটুও দ্বিধা করবে না

এটা আমি ভালো করেই আন্দাজ করতে পারছি। 🙄

বউকে বললাম বউ,, রাত অনেক হয়েছে আর বড্ড ঘুমও পেয়েছে এখন ঘুমাই কাল সকালে অনেক গল্প করবো। 😴😴😴

তাৎক্ষনিক ভাবে বউ উত্তর দিলো,, নাগো আমি তোমার এখানে থাকতে আসিনি,,  আমি আমার বাবাকে নিয়ে যেতে এসেছি,,,,,😑

তুমি জানো না হয় তো বাবাকে ছাড়া কতোটা অসহায় লাগে,,  আর তাছাড়া আমি তোমাকে আর কোনো অসুবিধায় ফেলতে চাচ্ছি না।  তুমি তোমার এই জগতে ভালো থেকো এটাই চাই।😣😓

এই কথা গুলো বলার সময় বউটার চোখ থেকে টপ টপ করে নীলচে রং গাল বেয়ে বেয়ে নিচে পড়ছে আর তার মুখটা লাল হয়ে গেছে।  মনে হচ্ছে যেনো অনেক অভীমানি স্বরে সে আমায় বাক্য গুলো ছুড়ে দিচ্ছে।😒😒😒

আমি শুধু হা করে চেয়ে চেয়ে তার কথা গুলো গিলতেছি, কারন কি বলব আর কি দিয়ে বউটাকে স্বান্তনা দিবো মাথায় কিছুই আসছে না। 😨

বউ আরো বলতে লাগলো জানো না  তোমায় আমি এতোটা বছর কতই না মিস করেছি সারাক্ষণ শুধু তোমার পথ চেয়ে বসে ছিলাম। 

(( আপনাদের একটা কথা বলে রাখছি আসলে আমাদের জগতের ১ দিন সমান ভূত রাজ্যের ১ বছরের কাছাকাছি))  

এই আশায় শুধু ছিলাম কখন তুমি আমার কথা মনে করবে আর কবে ছুটে চলে আসবে আমার কাছে। 🤕🏃

আমি বললাম একটা কথা কি জানো মানুষের সাথে পেত্নীর বিয়েটা আসলে আমাদের সমাজ মেনে নিবে না সবাই হাসাহাসি কটুবাক্য করবে আর তাছাড়া তুমিও তো জানো আমাদের এখানে তোমাদের কোনো আশ্র‍য় নেই।। কেউ তোমাদের ভূত সমাজকে ভালো চোখে দেখে না সবার মনে তোমাদের নিয়ে শুধু ভয় ভীতি ছাড়া অন্য কোনো প্রেম নেই। 🙄🥺🥺

বউ আমার কথা মাঝখানে থামিয়ে দিয়েই বলে দিলো থাক ঢপ দিতে হবে না।🤭😕  আমি বুঝে নিছি তুমি আমায় মন থেকে একটুও ভালোবাসোনি শুধু ভালোবাসি ভালোবাসি বলে অভিনয় করে গেছো। 🥴

হঠাৎ বাইরে থেকে ভোরের আযান শুনতে পেলাম আমি ঘুম ঘুম চোখ নিয়ে বউকে বললাম আমি নামায পরে আসি তুমি বিশ্রাম নাও,, আমি শশুরকে খাটের নিচ থেকে বের করে তার নাক থেকে তুলো বের করে দিলাম। 😝

শশুর মশায় চোখ খুলেই তার পেত্নী মেয়ের মুখটা দেখতে পেলো, আর সাথে সাথেই শশুরের চোখ নিলচে রং এ ভরে গেছে। 🥶

কারন ভূতেরা কান্না করলে তাদের চোখ থেকে নীলচে রং এর মত কিছু একটা  বেয়ে বেয়ে পরে। 😰😰😰

শশুর মশায় তার মেয়েকে দেখে একটু লাজুকতা আর একটু ভীত ভাব নিয়ে খাটের কোনে জড়সড় হয়ে আছে। 😱😱😱

বউ বলল বাবা তোমাকে এখানে আর থাকতে হবে না,,,  তুমি আবার তোমার রাজ্যে ফিরে চলো তোমায় ছাড়া আমরা অনেক অসহায় হয়ে পড়েছি। 😢😢😤

এই কথা বলতে বলতে বউ আমার হঠাৎ  করে হাউমাউ করে কেদে কেদে তার বাবার কোলে ঝাপিয়ে পড়লো, আর বলতে লাগল বাবা আমার সব কিছুই শেষ হয়ে গেছে আমি আর তোমার কখনো অবাধ্য হবো না বাবা। আমায় ক্ষমা করে দিও বাবা আর তোমার পছন্দ করা ভূতকেই বিয়ে করবো। 

আমি বুঝে ছিলাম বউটা আমাকে উদ্দেশ্য করেই বলছে তার সব কিছু শেষ হয়ে গেছে আর সেটার কারন আপনারাও জানেন🙄🙄🙁

 তাদের মাঝে বিভিন্ন কথোপকথন হচ্ছিলো এবং আমি উজু করার সময় তাদের কথাগুলো শুনে আমার বুঝতে বাকি রইলো না আর,,, 😔😔

আর সেটা হলো আমি আমার জগতে ফিরে আসার পর শশুর মশায় তার পেত্নী মেয়ের জন্য অন্য ভূতের সাথে বিয়ে ঠিক করে ফেলেছিলো। 

কিন্তু তার মেয়ে রাজি না থাকায় তাদের মাঝে হয়তো দ্বন্দ্ব হয়েছে আর সেটাই এখন তারা এখন কেদে কেদে বলতেছে। 😓😓😓

আমি তাদের এই কথা গুলো শুনতে শুনতে নামাযের জন্য চলে গেলাম। 

আসলে আজ কেনো জানি না পেত্নী বউটার জন্য খুব বেশি মায়া লাগতেছে হয়তো এটাকেই ভালোবাসা বলে।😟

নামায শেষে ফিরে দেখি বউটা আমার চোখ মুখ লাল করে খাটের এক কোনে বসে আছে। 

বুঝেছি অনেক অভিমান ভরা মন নিয়ে বসে আছে। 😲😠

আমি কিছু জিজ্ঞেস করতে না করতেই বউ বলে দিলো আমায় উদ্দেশ্য করে,, 

এক্ষুনি আমরা চলে যাবো তোমার অপেক্ষায় ছিলাম কারন ইচ্ছে ছিলো তোমায় শেষ বারের মতো করে দু চোখ ভরে দেখবো। 😢😢😢😭

এই কথা গুলো শোনার পর কেমন যেনো আমার মনটা উদাসীনতায় ভরে উঠলো  মনে হচ্ছিলো যেনো আমার কাছ থেকে দামী কোনো একটা জিনিস হারাতে চলছে। 🤕😩😟

ও কথা গুলো যখন বলছিলো তখন ওর চোখ থেকে ঝর্ণার পানির মতো করে নীলচে রং বেয়ে বেয়ে নিচে গড়িয়ে পড়তেছে। 😭😭😭

আমি এখন নিজেকে বুঝ দিবো নাকি ওরে  বুঝ দেবো নিজেই ভেবে উঠতে পারছিনা। 😧😧

আর পিছুনে ঘুরে তাকাতেই দেখি শশুর মশায় ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে😕 মনে হচ্ছে কিছু বলতে চাচ্ছে আমায় কিন্তু বলতে পারছে না হয়তো তার মনকে কেউ বাধা দিতেছে। 😟😟

হঠাৎ তার মানচিত্রের দিকে চোখ পড়লো আমার,,, সে সেই আগের মতোই ন্যাংটা অবস্থায় দাড়িয়ে আছে আর আমার দিকে হাত বাড়িয়ে আমার দেয়া সেই  সাদা পাঞ্জাবীটা আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল🥺🥺 জামাই এই রাখো তোমার দেয়া পাঞ্জাবি আমার রাজ্যে আর এটার আর দরকার পরবে না। 😟

জামাই আমি জানি তুমি আমার জন্য অনেক কস্ট করেছো অনেকের অনেক কথা শুনেছো আজ তার জন্য আমি তোমার কাছে খুবি ছোট হয়ে আছি তবে তোমার দেয়া কথা গুলো মেনে চলবো জামাই কখনোও আর লুইচ্চাগিরি করবো না। 

কথাগুলো শশুর মশায় খুব ভারী গলায় বলতেছে 😒

মনে হচ্ছে  তার  গলা কেউ চেপে ধরে আছে ৷।

এদিকে পিছন থেকে আমায় জড়িয়ে ধরেছে পেত্নী বউটা আর বলতেছে তোমাকে আমি সত্যি ভীষণ ভালোবেসেছি এবং ভবিষ্যতেও দূর থেকে ভালোবাসবো😟😟 

আমি তখন তাদের কথা গুলো শুধু নীরব শ্রোতা হয়ে শ্রবন করেই যাচ্ছি। কি যে তাদের বলবো সেই ভাষাটুকু আমার আসছে না মুখে।🤕🤕🤕

কখন মনের অজান্তেই যে আমার চোখে

হঠাৎ পানি চলে এলো বুঝতেই পারিনি। 😢

তবে সত্যি বলতে আজ ওদের দুজনার জন্য সত্যি খুব কস্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে অনেক দামী জিনিস হারায়ি ফেলতেছি।😣

ওরা দুজন এখন এক সাথে দাড়িয়ে আমায় হাত ইশারায়  টাটা জানিয়ে ধোয়ার কুন্ডলী হতে লাগলো আর আমার কানে মৃদু কন্ঠে ভেষে আসছে ( তুমি ভালো থেকো সারাজীবন)  এবং তোমার শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করার আগে পারলে একবার স্মরন করো আমি তোমার কাছে ছুটে আসবো শুধু একবারের জন্য তোমায় দেখতে। 🙄😓😓

এই বলে ওরা দুজন ধোঁয়ার সাথে মিশে গেলো আর আমি  অশ্রু চোখে রুমের মেঝেতে থ মেরে পড়ে আছি।।😨😨😰

আর ভাবছি আমি কি সত্যি সত্যি পেত্নীর প্রেমে পড়ে গেছিলাম🙄

 মুখে না বলতে  পারলেও পেত্নীর জন্য মনে মনে খুব কস্ট পাচ্ছি আজো।

কথাগুলো কাউকে বললে বিশ্বাস করবে না ভেবে কারো সাথে শেয়ার করার সাহস পাইনি।  তবে আজোও আমি আমার পেত্নী বউটার কথা মনে করি আর সেই সিনেমা হলের সামনে একা একা দাড়িয়ে থাকি যেখানে ওর সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয়েছিল। 🚶👰

৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷  সমাপ্ত ৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷ 👻

#পেত্নীর_সাথে_ঘর_সংসার_১৫

গলা থেকে যেনো স্বর বের করতেই পারতেছি না। আচ্ছা কি বলবো বলেন 🙄

আপনি কি আপনার বউয়ের সামনে অন্য মাইয়া নিয়া ঘুরতে পারবেন?🤔 

 

আপনাদের নিয়া ভাববো পরে আগে আমার পেত্নী বউটাকে সামলাই,,

উপর ওয়ালা জানে আজ কপালে কি আছে 🤢

বুঝেও না বুঝার ভান ধরে বললাম কে আপনি? 

বউ বলল আহা  কিচ্ছু বুঝে না দুধের বাচ্চা 🥵 

ওই হারামজাদা আমি তোর বউ আর এই রাত বেরাতে অন্য মাইয়া লইয়া ঘুরে বেড়াচ্ছো ঘরে বউ থাকতেও তোর লজ্জা করে না?😫🥴

এতো দেখছি খুব চোটে গেছে আজ,  ভেবে পাচ্ছি কি জবাব দিবো। 

বললাম কে বলেছে আমার ঘরে বউ আছে, আমার ঘরে কোনো বউ নেই আর যে বউটা ছিলো সেতো আমার সাথে থাকেই না। 😌😌

বউ বলল কিছুদিন পাশে থাকিনি বলে এই রকম আমার বাবার মতো লুইচ্চাগিরি করে বেড়াবে 🙄

এমা এ আমি কি শুনছি ভূতের মুখে রাম রাম 🤔

যাক এতোদিন বাদে হলেও বউ বুঝতে  পেরেছে  তার বাবা ওরফে আমার ল্যাংটা শশুর মশায় লুইচ্চা।☹

কিন্তু তার জন্য আমায় লুইচ্চা বলল কেনো।🤔🤔 

ওহ হ্যা লুইচ্চা শশুরের সাথে থাকতে থাকতে মনে হয় আমারো একটু লুইচ্চার বাতাস লাগছে। 🙁

বউ হুংকার দিয়ে  উঠল কি ঢ্যামনার মতো ভাবতেছিস আমার কথার উত্তর দে আগে হারামী। 🤨🤨🤨

না মানে!  

বউ বলল আর মানে মানে করতে হবে না 🙄

আজ থেকে তোর সাথেই আমি আমার শশুর বাড়ি স্বামীর ঘরে থাকতে চাই। 😌

এই কেলো করেছে বউ আমায় নির্ঘাত বাড়ি ছাড়া করাবে। 

বললাম বউ আমার লক্ষী বউ আমার  একটু বুঝার চেষ্টা করো 🥺

ওই তুই আমারে আর কি বুঝাবি রে, আমি তোর সাথে থাকলে ফস্টি নস্টি করতে পারবি না তাই তো  🙄😞

বললাম আরে না না তা নয়!!!

তবে তুমি যদি আমার বাড়ি ঢুকো তাইলে আমার  কেলেংকারী হয়ে যাবে কেনো বুঝতেছো না 🤔 তবে তোমার বাবা বলতো তুমি নাকি তোমাদের পরিবারের একমাত্র শিক্ষিতা পেত্নী কিন্তু তুমি এমন অবুঝ কেনো হয়েছো গো। 🙄 

আমি নিজেকে সংযত রাখার চেষ্টা করতেছি। 😶

বউ আমার কথা শুনে মনে হচ্ছে চিড়ার মতো গলে গেছে, মনে হচ্ছে তাকে শিক্ষিতা পেত্নী বলায় খুব খুশি হয়েছে। 😁😁😁😁😂😁😁😁😁

বউ বলল হ্যাগো শোনোনা আমি একা একা কেমন যেনো বিভোর হয়ে যাই। কিছুই ভালো লাগে না তোমায় খুব মনে পরে গো। 😣

আমি বউকে আরেকটু ভিজিয়ে বললাম বউগো আমি তোমায় মনে করি বলেই তোমারোও মনে পরে। আর যদি আমি না মনে করতাম তুমিও মনে করতা না এটাই সায়েন্স বলে আর এই বাক্যটা রসায়ন বইয়ের চতুর্থ সূত্রে দেয়া আছে দেখে নিও। 👈🙄🤪😂

বউ আমার কথার যুক্তি শুনে মনে হচ্ছে মুগ্ধ হয়ে গেছে😌😌

আর কেনোই বা হবে না তাকে সামলাতে সামলাতেই তো এখনো বেচে আছি এবং এতটুকু বুঝতে  পেরেছি যে ভূত পেত্নীদের পাম দিলে তারা গলে যায়।🤫🤭

বউ বলল হ্যাগো আজ আমায় কেমন লাগছে গো নতুন মেকাপ কিনেছিলাম নিউমার্কেট থেকে আজ দিয়েছি 😂🤣

মনে মনে কেদেই ফেললাম এই যাতনা বুঝি মানুষ সয্য করতে পারে আর। 😭😢

বলার ইচ্ছা না থাকলেও বলতে হচ্ছে 

বাধ্য ছেলের মতো করে 😮😮😮

বউয়ের গালে হাত রেখে কবিতার লাইনের মতো বলতে লাগলাম মনে যা আসছে, 

হ্যাগো তুমি অপরুপ রুপের রূপবতী,  তুমি ইটের ভাটার থেকেও সুন্দর, 

তুমি হাজারো কোকিলের মাঝে একমাত্র কাক। 😌😌😌😌

এর থেকে বেশি পাম আর মুখে আসছে না । 🤔

এই পামেই বউ লজ্জায় কালো হয়ে গেছে যদিও দেখতে নিরেট কালো আর এখন লজ্জায় কুচকুচে কালো করে রেখেছে মুখটা,,🙈

বউয়ের গালে হাত ছোয়াতেই ভাবীর ধমক শুনতে পেলাম,, ওই তুমি সেই তখন থেকে একা একা কার সাথে বির বির করতেছো, রাত কয়টা বাজে সে খেয়াল আছে তোমার ? 

বাড়িতে কি যাইবা না নাকি এখানেই একা একা বক বক করতে থাকবা 🙄🤔

আমি ভাবীর কথা শুনে নির্বোধের মতো হা মেরে তাকিয়ে আছি,, তাইলে এতক্ষন কি সপ্ন দেখছিলাম 🤔

তবে আমার বউকে চিনি সে যা বলে সেটাই করে আর তাকে মনে মনে একটু ভয়ও পাই 😐

তার মানে পেত্নীকে এখন আমার ঘরে বউ হিসেবে বরণ করতে হবে? 😪

ভাবী আমার হাত ধরে বড় রাস্তা পার করে বাড়ির পাশের সেই বাঁশবাগানের রাস্তা পেড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে আমায়।👫

 কিন্তু তখনও আমি সেই কথাটাই আমার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে তাইলে কি সত্যি আমার ঘরে পেত্নী বউ টা আশ্রয় নিবে নাকি 😏

কিছু সময় বাদে ঘরের বাতি দেখতে পেয়ে বুঝে গেলাম বাড়ির সামনে এসে পড়েছি। ঘরের ভিতর ঢুকেই শরীর টা কেমন থ মেরেছে। সারা শরীর জিমজিম করতেছে। 

হঠাৎ মায়ের গলার আওয়াজ শুনতে পেলাম, কিরে খোকা এসেই ঘুমিয়ে পরলি নাকি আর তুই তো নাক ডাকো না তাইলে আজ এতো ডাক ডাকতেছিস কেনো। 🙄🙄

হঠাৎ বিভোর কাটিয়ে মনে পড়ে গেলো সেই খান্দানী মানচিত্র মার্কা শশুরের কথা থুক্কু এখন তাকে মানচিত্র মার্কা বলা যাবে না, তার এখন অনেক লজ্জা হইছে সে এখন মানচিত্র ঢেকে রাখে । 😣😣😣

আমি ভুলেই গেছিলাম সে আমাদের আগেই বাড়িতে চলে আসছে, মনে হচ্ছে সেই বুইড়া ভামের কথাই বলতেছে। 

একটু পড়ে আমার কানেও শশুরের অসুরের মতো নাক ডাকার আওয়াজ এলো। 💨

মা আমার রুমে কড়া নারার আগেই আমি আমার রুমে প্রবেশ করে ফেললাম আর বউয়ের কথা মাথা থেকে সরিয়ে ফেললাম, আগে এই ব্যাপারটা সামলাই তারপর না হয় বউয়ের কথা ভাববো। 😑

হঠাৎ ছোট ভাবি বাথরুম থেকে মাকে ডেকে বলল আম্মু আমার ফেইসওয়াস টা খুজে পাচ্ছি না।

মা ছোটো ভাবীর কাছে গেলো ফেইসওয়াস খুজতে। 

এই সুযোগ টা কাজে লাগালাম দৌড়ে গিয়ে শশুরকে খাট থেকে নামিয়ে শশুরের নাকের মধ্যে তুলে ঢুকিয়ে  দিলাম🤨 

যাতে শালায় আর নাক ডাকতে না পারে থুক্কু শালা না শশুর হবে। 🥵

(প্লিজ আপনারা শশুরকে শালা বইলেন না আবার।)😁😂😁

কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার ঘরের দরজায় কড়া নারার আওয়াজ পেলাম আমি ভাবলাম মা হয়তো দেখতে এসেছে আমি নাক ডাকছি কেনো। 🤥

আমি শশুরকে চাদর মুড়িয়ে খাটের নিচে ঢুকিয়ে রেখে দিলাম। 

তারপর দরজার সামনে এসে ঘুমের ভান ধরে দরজা খুলেই বললাম হাই তুলে  (ওয়্যায়া) মা তুমি এতো রাতে এসেছো কেনো। 😴

আমি অপেক্ষায় ছিলাম মা বলবে খোকা তুই হঠাৎ নাক ডাকতেছো কেনো। 

কিন্তু ঠিক এর বিপরীত কন্ঠে বলে উঠল কিগো খুব ভালো অভিনয় করতে পারো দেখছি।  

সিনেমা দেখে অভিনয় করা শিখেছো নাকি 😇

যে কথাটির জন্য আমি একদম প্রস্তুত ছিলাম না। 

খুব চেনা চেনা কন্ঠ শুনে মুখ তুলে তাকাতেই দেখি এতো আমার ল্যাংটা শশুরের একমাত্র বড় মেয়ে (ওরফে আমার পেত্নী বউ) 😪😪😪😐

#চলবে_তো 

পেত্নীর_সাথে_ঘর_সংসার_পর্ব_১৩

খান্দানী মার্কা শশুরের দিকে তাকাতেই আমার চোখ কপালে উঠে গেছে। 

এমা এ আমি কাকে দেখতে পাচ্ছি,,, 

এটা আমার শশুর মশায় নাকি যাত্রা পালার নায়িকা এসে হাজির। 

ব্যাপারটা আপনাদের ক্লিয়ার করে নিচ্ছি,,

শশুর মশায় লুকাতে গিয়ে ছাদে লুকিয়ে পড়েছিলো এবং সেখানে ভাবীদের ছায়া আর ব্লাউজ পরে এখন নিচে এসে হাজির হইছে।

বিশ্বাস করবেন কি না জানি না তবে এখন ঠিক যাত্রার বিউটি বানুর মতই লাগতাছে। আজ সে সানি লিওনের রুপকেও হার মানাতে প্রস্তুত।

আমি জিজ্ঞেস করলাম শশুর মশায় এ আপনি কি করলেন শেষমেশ এই রকম পোশাক পড়লেন কেনো। 

আরে জামাই বইলো না, কেমন যেনো হঠাৎ আমার লজ্জা লজ্জা লাগতাছে। 😌

এই কথা বলেই ছায়ার নিচের অংশ টেনে নিয়ে মুখের উপরে রেখে মুখ ঢেকেছে। 🤩

সন্ধ্যা বেলা যে আবারো এই পরিস্থিতিতে শশুরের এই খানদানি মানচিত্র খানা দেখা লাগবে এটা নিয়ে একদমি প্রস্তুত ছিলাম না ।🥺

যাই হোক কস্ট টা আমার কিছুটা হলেও কমছে আর কিছু না হোক শশুরের লজ্জা ফিরে এসেছে এটাই শুকরিয়া জানাই ভূত রাজার দরবারে।

আমি বললাম থাক আর মুখ ডাকতে হবে না মুখ থেকে আপনার লজ্জা ঢাকার কাপড় টা যথা স্থানে রাখুন। 

(তাছাড়া আমি আন্দাজ করতে পেরেছি  

এগুলো আমার ভাবীদের ইম্প্রেশ করার জন্যই করতেছে কারন ওই যে বললাম আমার ভাবীরা লজ্জাবতী পুরুষ পছন্দ করে থুক্কু লজ্জাবান।)

তারপর রীতিমতো খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়লাম এবং শশুরকে খাটের সাথে বেধে রেখে দিয়ে আমার পাশে শুইতে বললাম। কারন একটা মাতাল কে বিশ্বাস করা যায় কিন্তু এই মানচিত্র মার্কা শশুরকে বিশ্বাস করাটা বোকামি ছাড়া কিছু হবে না। 

হঠাৎ করে চোখ বুঝতে না বুঝতেই চোখে ঘুম এসে গেলো। 

সকালে বাজারের রাস্তার দিকে যেতে যেতে হঠাৎ শুনতে পাচ্ছি একটা মেয়েলি কন্ঠে বলতেছে আমাকে লক্ষ্য করেই, আমায় ছাড়া খুব ভালোই আছো তাই না। 🙄

গলাটা খুব চেনা চেনা মনে হচ্ছে হঠাৎ মনে পড়লো আরে এটাতো আমার পেত্নী বউটা। কিন্তু কথা ছিলো তো সে আর এই মুখো হবে না তাইলে এখানে আবার আমারে বিরক্ত করতে আসলো কেনো। আমি কন্ঠ চিনেও না চেনার ভান করে বললাম আপনি কি আমায় কিছু বলতেছেন? 

বউ আমার বলল তুমি সত্যি একটা সার্থপর কথা দিয়েছিলে কোনোদিন আমায় ছেড়ে যাবে না কিন্তু সুযোগ পেয়ে তুমি তোমার বাড়িতে খুব আনন্দের সহিত দিন কাটাচ্ছো। 

 

ওহ আচ্ছা আমার প্রানো প্রিয় বউ নাকি হ্যাগো তোমায় খুব মিস করছিলাম এতোদিন। 

কিন্তু তোমার লুচ্চু মার্কা বুইড়া ভাম বাবাটা আমায় সুস্থে তোমার কথা একটু ভাবতেও দেয় নি। 

হ্যা জানি জানি তুমি আমায় কতটা ভালোবাসো আর ঢং করতে হবে না😏

ও বউ রাগ করছো কেনো,,,🙄

তুমি জানো না আমি তোমায় ছাড়া দিনের চাদকে সূর্য্য হিসেবে দেখি 😶 আর তুমি ছাড়া আমার রাতের আকাশে কোনো সূর্য  খুজে পাই না 🤢🥺😥

বউ আমার এতো ইমোশনাল হইয়া গেছে আমার এই দুইটা ভিজানো মিথ্যা কথায় তা আমি বলে বুঝাতে পারুম না।

বউ হাউমাউ করে কু কু কু কেদে আমায় আমায় জড়িয়ে ধরে বলল হ্যাগো তোমায় আমি না জেনে কতো খারাপ খারাপ কথা বলেছি আর তুমি আমায় এতো বেশি ভাবো কিছু মনে কইরো না গো।  

আমি তো অবাক হইয়া শুধু শুনতেছি আর ভাবতাছি ভূতের এতো ভালোবাসা আসে কই থেকে 🤔🤔🤔🤔

আমি খুব আবেগের সাথে বলে ফেললাম হ্যাগো শুনছো, কথা দাও আমায় কখনো ছেড়ে যাবে না।। 

বউ আমার কু কু কু করে কাদতে কাদতে বলল না গো আর কোথাও যাবো না তোমায় ছেড়ে। আমি তোমাদের ঘরেই বউ হয়ে থাকবো। 👸

এই সেরেছে,,, এতোটা আবেগ দেখানো হয়তো আমার ঠিক হয় নি এখন তো আবার ফেসে গেলাম 🙄🙄

কি জানি কি আছে কপালে,,, আর মনে মনে নিজের প্রতি একটা রাগ দেখিয়ে মাটিতে স্বজোরে পা দিয়ে মাটিতে দুইটা লাথি মারি। 🦵🦵

হঠাৎ চিৎকারের শব্দ শুনে ঘুম ভেংগে গেলো আর দেখতে পাচ্ছি শশুর আমার কুকু কুকু কুকু করে কাদতেছে আর চেচাচ্ছে আর তার মানচিত্র খানা ধরে ফুয়াচ্ছে। 

আমার বুঝতে আর বাকি থাকলো না 

এতক্ষণ বউয়ের সাথে সপ্নে কথা হয়েছিলো আর মাটিতে লাথি দিতে গিয়ে শশুর মানচিত্রে লাথি দিয়ে ফেলেছি 🤔😐😐

এদিকে মা ভাবি ভাই জান সবাই কু কু কু চিৎকার শুনে আমার রুমের দরজায় করা নাড়ছে আর আমায় ডাকতেছে কি হয়েছে কি হয়েছে খোকা।

হায় হায় এবার কি হবে 🤔

আমি শশুরের মুখটা চেপে ধরে বললাম না না কিছু হয় নাই মা,, 

মা বলল কি বলছিস কিছু হয়নি এইতো তুই কু কু কু করে চিৎকার করছিলি।

না মা তেমন কিছুনা একটা খারাপ সপ্ন দেখেছিলাম তো তাই হয়তো চিৎকার করে ফেলছি। 

আমার কথা শুনে সবাই শান্ত হয়ে গেলো এবং মা আমায় নামায পড়ার জন্য উঠতে বলে ভাবী ভাইজানদের নিয়ে নিচে চলে যায়।

শশুরের মুখ থেকে আমার হাত সরাতে না সরাতেই শশুর বলে ফেলল,,, জামাই তুমি আমায় সত্যি কি সয্য করতে পারো না 🙄🤔

আমি কি বলে শশুরকে সান্ত্বনা দিবো ভেবে পাচ্ছি না,,, আমি সব বুঝেও না বুঝার ভান করে বললাম আপনি কাদতেছিলেন কেনো? 🤔

আহারে ন্যাকা কিছুই জানে না 😏

তুমি আমায় আমার লজ্জার উপর লাথি দিয়েছো। আর এখন বলতেছো তুমি কিছুই বুঝতে পারছো না 🤢😪😪

আমি হাসবো নাকি কাদবো ভেবে না পেয়ে,, অভিনয় এর সহিত জীভে কামর দিয়ে বললাম হায় হায় শশুর মশায় এ আপনি কি বলতেছেন 🥵🥵 আপনার কোথাও লাগেনি তো,,, 

শশুর তার মানচিত্র খানার দিকে ইংগিত করে বলল না না তেমন কিছু হয় নি তবে এখন আমার ইজ্জতের অনেক সাস্থ বেড়ে গেছে চিনতেই পারছি না এটা কার সম্পদ। 😂😂🤔

একটু পরেই আযান দিলো আমি নামাযের জন্য বের হয়ে গেলাম। 

শশুর সেই ভোরবেলা থেকেই তার মানচিত্রের দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে খাটের এক কোনে বসে আছে , ,, মনে হচ্ছে তার খান্দানী মানচিত্রটার সাস্থ্য হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় সেটাকে তিনি চিনতে পারছে না আর এখন চেনার চেষ্টা চালাচ্ছে ।

___চলবে তো___ 🙄

#পেত্নীর_সাথে_ঘর_সংসার_পর্ব_১২

ভাবীদের অজ্ঞান অবস্থায় পেয়ে রুমের দিকে  তাকাতেই আমার সারা শরীর কেপে উঠলো শালার বুইড়া ভামের মাথায় সত্যি কি কিছু নাই,,,।

 

যদিও ভূতের বুদ্ধি হাটুতে থাকে তাই বলে এমন বেহায়ার মতো থাকাটা কি কোনো মানে আছে 🤔।

,,,, হ্যা আপনাদের বলতেছি তবে শুনুনঃ শশুর মশায় নির্লজ্জর মতো ফ্যানের সাথে তার মানচিত্র খানা ঝুলিয়ে রেখেছে। 🥴

আর নিচে মাথা রেখে আয়নার দিকে তাকিয়ে  তার নাকে হাত রেখে কু কু কু করে কাদছে।

 মনে হচ্ছে বেচারা সেদিন বুঝতে পারেনি তার নাক কেটে গেছিলো। 

তবে তার জন্য আমি আবারো একটু মনে মনে সমবেদনা জানাতে ভুল করিনি। 

শত হলেও আমার একমাত্র শশুরের  নাক বলে কথা তাছাড়া এটা সম্মানের কথাও বটে। 😌

তবে এই রকম অবস্থায় আর বেশিক্ষন থাকলে কেলেংকারী ঘটতে আমার আর বেশিক্ষণ সময় লাগবে না। 

এর মাঝে যদি মা এসে পরে,,,😝

আর এসে যদি দেখে শশুর মশাইয়ের মানচিত্র খানা ঝুলিয়ে রেখেছে ফ্যানের পাখার সাথে। তাহলে এবার তার ৩য় বারের মতো হার্ট এটাক্ট হয়ে যাবে কেউ ঠেকাতে পারবেনা। 🙄

যেই ভাবা সেই কাজ সব কিছু ভুলে গিয়ে শশুর মশায় কে একটা ধমক দিয়ে বললাম।

,,,ওই আপনার এই রকম দশা করার মানে টা ছিলো কি?  

যদি আপনার থোবড়াটা দেখার এতই ইচ্ছা ছিলো,,, 

সুন্দর করে আয়নার সামনে দাড়ালেই পারতেন। এমন করে বাদরের মতো ঝুলে থাকার কি আছে তাও আবার মানচিত্র খানা ঝুলিয়ে রেখেছেন ফ্যানের সাথে। 😯

আমার কথা শুনে তো শশুর মশায় আরোও জোরে জোরে কু কু কু করে কাদতে শুরু করে দিছে মুখ খানা আরো বেশি লাল করে।

তখন ইচ্ছে করছিলো ফ্যানের লাইনের সুইচটা টিপে দেই তাইলে শশুরের  মানচিত্র টা ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতো। 🤪

কিন্তু কি করে করবো বলুন আর যাই হোক শশুর বলে কথা। 

শশুর মশায় তো কু কু কু করে কেদে কেদে দুইকুল একাকার। আমি তাকে মরার কান্না থামিয়ে নিচে নেমে আসতে বলি।

 শশুর মশায় বলল জামাই বাবাজী আমার নাক ছাড়া আমায় কেমন লাগছে বলতে পারো।  

বুইড়া ভামের কান্ড দেখে অবাক হইয়া মনে মনে বলতে লাগলাম,, যে কিনা তার নাক কেটেছে বলে ব্যাথায় কান্না করবে সে কিনা বলতেছে তাকে এখন দেখতে কেমন লাগছে।🤔🤔

আমি বললাম আপনাকে এখন নায়ক অমিতাভ বচ্চন লাগতাছে। 

শশুর বলল নায়ক আবার কি জিনিস আমি মনে মনে বললাম মিথ্যা কথা বলেও পার পাইনা হারামী শশুর থেকে। আরে সেদিন বললাম না আপনারে সিনেমা দেখাতে নিয়া যাবো।

সেই সিনেমার ভিতরে যে একটা মেয়ে আরেকটা ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বলে ওগো তুমি আমারি।

 সেই ছেলেকে বলা হয় নায়ক।

শশুর এবার বুক ফুলিয়ে রেখে মরার কান্না ভুলে বলতেছে,,, 

ওহ আচ্ছা তাই বুঝি! 😲

আচ্ছা জামাই আমারে যদি নায়কের মতই লাগে তাইলে তোমার ভাবি দুইটা আমারে দেইখা চিৎপটাং হইয়া রইছে ক্যান। 🙄🙄

আরে আমি তো ভুইলাই গেছিলাম আমার প্রানের দুই ভাবী এখনো অজ্ঞান হইয়া আছে।  

আমি শশুরকে ক্ষিপ্ত স্বরে বললাম আপনার ওই খানদানি মানচিত্র খানা দেইখা তাদের কাছে খুব ভালো লাগছে এবং তারা ক্রাশ খাইয়া  চিৎপটাং হইয়া খুশিতে পড়ে আছে। 

শশুর আবারো জিজ্ঞেস করে বসলো,, আচ্ছা জামাই ক্রাশ আবার কি? 🙄 

এখন আমার মাথায় সত্যি সত্যি রক্ত উঠে গেছে। আমি বললাম এইসব আপনি বুঝবেন না এগুলো আজকাল মানুষের মাঝে হইয়া থাকে।  

শশুর বলল তাইলে জামাই একটু ওদের দেখার জন্য সাহায্য করো না আমি তাইলে আগের মতো ঝুলিয়ে রাখি ওরা আরেকটু ক্রাশ হোক। 🙄🤪

আমি যে এখন শশুর কে কি যে বলবো ভাষা খুজে পাচ্ছি না,, এতো বড়োও লুইচ্চা থাকে মানুষ।🤔  

ধ্যাৎ আমি কারে মানুষ বলি এটাতো লুইচ্চা ভূত। 

হারামীটায় ওর রাজ্যেও লুইচ্চামি করে বেড়াতো আর এখানেও এসে লুইচ্চাগিরি ছাড়ে নাই।  এই জন্যই সেখান থেকে তাড়া খেয়ে পৃথিবীতে আসছে তবুও শিক্ষা হয় নাই। 🤨

আমি শশুরকে বললাম আচ্ছা আপনি না আজ বললেন আপনার খুব লজ্জা করতেছে তাইলে এখন এমন লুইচ্চামী করেন কি করে। 🙄

,,,,,হায় হায় জামাই আমার তো লজ্জা লজ্জা ভাব আসছিলো ভুইলা গেছিলাম জামাই তুমি কিছু মনে কইরো না।

 এই বলে শশুর তার মানচিত্র খানা নিজের দুই হাত দিয়া চেপে ধরেছে। এমন ভাব করে চেপে ধরেছে মনে হচ্ছে বড় সড়ো কোন মাছ ধরা পড়েছে। 😌

আমি বললাম এইতো আমার শশুরের লজ্জা ফিরে এসেছে আহারে কি লজ্জাবতী রে,,,,,, 

থুক্কু লজ্জাবতী না লজ্জাবতী তো মেয়েদের বলে। যাই হোক একটা হইলেই হলো ভূতের আবার লিংগ নির্ধারন করে কি লাভ। 😏

আমি বললাম শশুর মশায় আমার দুই ভাবী কিন্তু খুব লাজুক পুরুষ পছন্দ করে। তাদের সামনে কখনোই আপনার মানচিত্র খানা তুলিয়া ধরবেন না। 🤔

আমার বলতে বাকি কিন্তু শশুরের লজ্জা শুরু হতে দেরি নেই,, 😏😏

সে এক অভিনবো কায়দায় দুইহাত দিয়ে একবার মুখ ঢাকে আরেকবার তার মানচিত্র খানা ঢাকে।

তখন ইচ্ছা করছিলো এখুনি কেউ একটু বিশ এনে দিলে খাইয়া মইরা যাইতাম তাও এই পরিস্থিতি দেখা থেকে উদ্ধার পেতাম। 😒

এবার একটু শান্ত হয়ে শশুর কে বললাম শশুর মশাই ওভার একটিং করতে হইবে না।  আপনি গিয়ে কোথাও লুকিয়ে পড়ুন ভাবীদের জ্ঞান ফিরাতে হবে। 🤨🤨

শশুর বলল তাতে কি জামাই তুমি জ্ঞান ফিরাও আমিও দেখি। 

হে উপর ওয়ালা আমায় তুইলা নিয়া যাও,,,  এ কি ভূত শশুর দিলা আমার কপালে। শশুরকে বললাম ভাবীরা জ্ঞান ফিরে যদি আপনার মানচিত্র খানা আরোও একবার দেখতে পায় তাইলে তারা স্ট্রোক করতে আর দ্বিতীয় বার ভাব্বে না। 

শশুর বললো আচ্ছা জামাই স্ট্রোক আবার কি জিনিস !!! 

কেনো আপনি না ডাক্তার আপনার এসব তো খুব ভালো করে৷ জানার কথা। 

আমার কথা শুনে শশুর মশায় একটা ভাব নিয়া বলল ওহ স্ট্রোক সেটা আগে বলবা তো,,, 

তাছাড়া আমাদের রাজ্যে এটাকে  স্ট্রোক বলেনা  এটাকে বলে ______🙄

আমি সেখানে থামিয়ে বললাম আমি এটা পরে আপনার কাছ থেকে শুনে নেবো দয়া করে এখান থেকে কোথাও লুকিয়ে পড়ুন। 

শশুর মশায় কিছুক্ষনের মধ্যে সেখান থেকে কোথায় যেনো চলে গেলো। 

উফফ হাফ ছেড়ে বাচলাম,, 

ভাবীদের মুখে পানি ছিটাতেই তাদের  জ্ঞান ফিরে এলো,, আর বিরবির করে দুইজনে একি কথা বলছে ও বাবাগো এতো বড়, ও বাবাগো এতোবড়,,,

আর বাকিটুকু পরিষ্কার শোনা যাচ্ছে না কি বলতেছে।

হয়তো আমার খানদানি শশুর মশাইয়ের সুঠম লম্বা দেহ দেখতে পেয়ে ভয় পেয়েছে।

আমি তাদের উঠিয়ে তাদের রুমে দিয়ে উপরে চলে এলাম মনে হচ্ছে একটু সস্তি ফিরে পেলাম। 

একটু পরে জানালার ফাক দিয়ে শশুর মশায় বলে উঠলো,,, জামাই বাবাজী একটু তাকিয়ে দেখতো আমায় কেমন লাগছে এখন 😒😒

_____চলবে তো _____

#পেত্নীর_সাথে_ঘর_সংসার_পর্ব_১১

তান্ত্রিক আর আমি বাড়িতে পৌছাতে পৌছাতে  দেখি সে এক  কেলেংকারী করে ফেলেছে আমার খানদানি শশুর মশাই। 

কক কক করতে করতে সাড়া বাড়ি কাপিয়ে তুলেছে আমার লাল মোরগ শশুর ওরোফে ন্যাংটা ভূত শশুর। 

আমার দুই ভাবী তো বেহায়ার মতো চিল্লাপাল্লা শুরু করে দিয়েছে । 

 ,,,আরে এই দিক দিয়া গেলো, ওরে ওই দিকে গেলো,,,  ধর শালারে।।।

আমি এখন হাসবো নাকি কাদবো বুঝতে পারছি না,,,,,

যেখানে ভাবী আমার শশুরকে ডাকবে তালৈ বলে। সেখানে আজ তারা শালা বলে সসম্বোধন করতেছে।

কি আর করার পরিস্থিতির স্বীকার 🤔

নিজেকে বুঝ দিয়ে বললাম কিছুই করিবার নাই সব কিছুই ঘটিবার তরে বুঝিয়া নিতে হইবে বলে মাঠে নেমে পড়লাম।  আমিও ভাবিদের সাথে তাল মিলিয়ে বলতে লাগলাম ধর শালারে ধর। 

আমার আওয়াজ পেয়ে শশুর মশাই আগের থেকে বেশি চেচিয়ে কক কক করে উঠলো,,,, 

মনে হচ্ছে শশুর বোধ হয় আমি শালা বলায় রেগে গেছে। 

শশুর তো তবুও থামছে না উল্টো আমার পিছু নিয়েছে মনে হচ্ছে যেনো মোরগ আমায় ধরার জন্য ব্যকুল হইয়া গেছে। 

আমিও খিচ্ছা দৌড় দিয়া পুকুর পাড়ের বাগানের দিকে ঢুকে পড়লাম আর ন্যাংটা শশুর থুক্কু,,  আমার মোরোগ শশুর মশাইও আমার পিছু পিছু বাগানের মধ্যে ঢুকে  গেলো,,, 

আর ওই দিকে ভাবীরা উঠোনে চিৎপটাং হয়ে হাপাচ্ছে। 

 আমার মা ভাবীদের পাশে বসে জোড়ে জোড়ে আওয়াজ তুলে বলতে লাগলো ওই হারামজাদা মুরগীরে ধরে,,, তোমাদেরকে ঠ্যাং খাওয়াই ছাড়মু। 🤪

এদিকে শশুর মশাই কক কক কক করেই চলছে,, মনে হচ্ছে আমায় কিছু বলতে চাচ্ছে,,, 

আজ প্রথম শশুর মশাই এর থেকে কিছু শোনার ইচ্ছা জেগেছে মনে। 

কিছুক্ষণ বাদে তান্ত্রিক এসেও হাজির তাকে খুব অনুরোধ করে বললাম তান্ত্রিক আমার শশুর মশাইকে আগের মতো করে ফিরিয়ে দেন। 

তান্ত্রিক  কিছুক্ষণ কি একটা মনে মনে বলে ফু দিলো মোরগ শশুরের উপর  । এ মা এ মোরগ দেখি সেই আমার ন্যাংটা শশুর মানচিত্র সহ দাতে দাত কেলিয়ে দাড়িয়ে আছে। 😁

তান্ত্রিক এর কাছে কিছু লাকালাম না  পূর্বের ঘটনা বিস্তারিত খুলে বললাম,,, এই না না  ওই সব বলি নাই 🤫

ওই যে আমার একটা ভূতুরে বাচ্চাও আছে। বুঝতেই তো পারছেন আমি একটা খানদানি পোলা এই খানদানি পোলার গায়ে কখনো কলংক লাগুক এইডা আমি চাচ্ছিনা। 

তান্ত্রিক আমাকে একটা তাবিজ দিয়া কইলো সাবধানে রাখতে এই বলে তান্ত্রিক  চলে গেলো। 

এদিকে আমার শশুর কোনো কথা না বলে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে মানচিত্র খানা ঝুলিয়ে রেখে  দাত গুলো হিইই করে। 😁

আমি শশুরকে বললাম। আপনার সাথে যা হইছে আমি তার জন্য খুবি দঃখিত আমায় আপনি ক্ষমা করে দেন প্লিজ,,, 

থুক্কু প্লিজ কইতাছি কেনো ভূতে আবার ইংরেজি পারে নাকি। 🤔

কিন্তু যা বলি ন্যাংটা শশুর আমার স্ট্যাচুর মতই মানচিত্র নিয়া দাড়াইয়া আছে। 

এতখন একটা জিনিস লক্ষ্য করি নাই যে আমার শশুরের নাকটা কাটা। 

আমি তো ভয় পাইয়া গেছি তাছাড়া খুশিও হইছি কারন এই নাক নিয়া আমার উপর দিয়া কতই না ঝড় বইয়া গেছে।

আমার বুঝতেও আর বাকি রইলো না এটা দুই ভাবীর কাজ হয়তো তারা শশুর কে জবাই করতে  গেছিলো আর আমার শশুর অসুরের মতো নড়া চড়া করাতে তারা হয়তো নাক কেটে ফেলেছে। ভালোই হলো আমার কাজটা তারা করে দিলো।  

হঠাৎ শশুর মশাই হাউমাউ করে কাদতে লাগলো আর মুখখানা লালে লাল হইয়া গেলো। আগেই বলেছি ভুতদের মন খারাপ থাকলে বা রাগ হইলে মুখ লাল হইয়া যায়। 

বিরবির করে বলতেছে আমার কানে আসতেছে জামাই আমি তোমারে খুব জালাই তাই না।

 আমি কিছু বলব সেটা ভেবে শশুরের দিকে তাকাতে মনটা খুবি ভারী হয়ে গেলো। একটা মায়ায় ভরা মুখ দেখতে পেলাম চোখের সামনে এতোদিন বাদে।

 

যাই হোক, কিন্তু যে উত্তরটা (ন্যাংটা) শশুরকে বলতে চেয়েছিলাম সেটা আর বলে ঊঠতে পারলাম না। 

নিজেকে অনেক কন্ট্রোল করে বললাম শশুর মশাই আপনাকে কাল সিনেমা দেখাতে নিয়া যামু। 

শশুর তার মানচিত্র খানার দিকে তাকিয়ে কি যেনো একটা ভেবে বলল জামাই আমার কেমন যেনো একটা লজ্জা লজ্জা লাগতাছে। 

আমি অবাক হইয়া ফ্যালফ্যাল কইরা তাকাই আছি শশুরের মানচিত্র খানার দিকে। এ তো দেখছি ভূতের মুখে রাম রাম 🙄🙄🙄

মনে মনে বললাম শালার ন্যাংটা  শশুরের আবার লজ্জাও হইছে,,,,,

থাকে সারাক্ষণ মানচিত্র খানা বাহির করিয়া আর এখন ফেলুদার মত করে ভাব দেখিয়ে বলছে জামাই আমার লজ্জা লাগতাছে,,, বুইরা ভামের রস দেখে বাচি না। 🙄

যাই হোক তবুও খুশি হইলাম বুইড়া ভামের আক্কেল হইছে এখন নিজ বাড়িতে পৌছানো দরকার। 

শশুরকে বললাম আপনি এ নিয়ে কোনো চিন্তা কইরেন না। 

আপনার মানচিত্র ঢাকার ব্যবস্থা করে  দিতেছি। 

তবে এখন বাড়ি ঢুকবেন কি করে সেটা ভাবুন। 

 আপনাকে তো আমার দুই ভাবী পেলে কাইটা টুকরা টুকরা করবো। 😶

শশুরকে বললাম আপনি আমার পিছু পিছু আসেন কোনো উল্টা পাল্টা কাজ করবেন না কইয়া দিলাম,, না হলে কিন্তু আপনার খবর আছে। 

হাটতে হাটতে বাড়ির উঠোনে চলে এসেছি আবহাওয়া মোটামুটি স্বাভাবিক মনে হচ্ছে,,,, 

রান্নাঘর থেকে শোনা যাচ্ছে মা বলতেছে হারামজাদার গায়ে এতো অসুরের মতো শক্তি আসে কই থেকে একবার যদি ধরতে পারতাম তাইলে ওর অসুরেপানা দেখানো বুঝাইয়া দিতাম। 

বুঝতে বাকি রইলো না আমার,, 

এই হারামজাদা অসুর আর কাউকে বলতেছেনা এই খানদানি পোলার মানচিত্র মার্কা শশুরটাকেই বলতেছে।

আহারে আজ আমার মান সম্মান ধুলায় মিশিয়ে দিলো। 🥴

যাই হয়ে যাক, ওই দিকে কান দিলে চলবে না আগে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করতে হবে বেলাও পড়ে আসছে। 

পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখছি আমার শশুরের মানচিত্র সহ হাটু কাপতেছে।  ব্যাপার টা না বোঝার কিছু নয় মায়ের বকুনি শুনেই কাপছে৷ 

শশুরকে কোনো কথা না বলে টান মেরে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে বললাম সোজা উপরে চলে যান। কেউ যেনো আপনার খানদানি মানচিত্র দেখতে না পায়। এই বলে শশুরকে উপরের ঘরে পাঠিয়ে দিলাম।

কিছুক্ষণ পর আমি গলায় খেক দিয়ে বললাম শালার মোরগটা হাত থেকে ফস্কেই গেলো। 🤪

অমনি করে দুই ভাবী আমার রুম থেকে বের হয়ে আমায় ছোট খাটো অপমান করা শুরু করে দিলো,,,,, 

এই কেমন পুরুষ তুমি হ্যা একটা মোরগ এর সাথে পারলা না আরোও যত ধরনের লাঞ্চনা আছে করে দিলো। 

আমি আর কি করবো মাঝখানে নিরুপায় শ্রোতা হিসেবে দুই ভাবীর ভাষন একযোগে শুনতেছি।

হটাৎ করে উপর থেকে বিকট শব্দ হলো 

সবাই চমকে উঠলো আর সবাই আমায় বকুনি ছেড়ে উপড়ের দিকে এগোতে শুরু করলো। আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না,,, এটা আমার  মানচিত্র মার্কা শশুর আবার কোনো অঘটন ঘটিয়ে ফেলেছে,,। 

ভাবতে ভাবতেই দুই ভাবির চিৎকার কানে এলো,, আমি এক মুহূর্ত দেড়ি না করে উপরে এসে দেখলাম দুই ভাবী বেহুশ হয়ে পড়ে আছে। 

_____চলবে____

#পেত্নীর_সাথে_ঘর_সংসার_পর্ব_১০

আমি শ্বশুরকে টানতে টানতে উপরের ঘরে নিয়ে গেলাম। একটু পর মা আমাদের জন্য খাবার নিয়ে এলেন উপরে। মাকে বললাম: মা তুমি যাও, আমরা খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়ব।"

মা বলল: না, আমি থাকি, তোদের আবার কিছু লাগতে পারে।"

শ্বশুর মশায় বললেন: হ্যা আপনি থাকুন....."

শ্বশুরের কথা শুনে খুব রাগ হলো তার উপর। এই ভূতের বেটা দেখি নিজের চেহারা দেখাইয়া আমার মাকে হার্ট এ্যাটাক করাতে চাই।

তাড়াতাড়ি করে বললাম: না মা, কিছু লাগবেনা আর, আমার বন্ধুটা এমনিতেই কম খাই।" মাকে জোর করে নিচে পাঠায় দিলাম। তারপর দু'জনে মিলে খাওয়া শেষ করে শুইতে গেলাম। 

শ্বশুর মশায় ঘুমিয়ে পড়লে একটা শেকল বাধলাম তার পায়ে। এই বেটার বিশ্বাস  নাই, মাঝরাতে উঠে আমার সুন্দরী ভাবীর রুমে গিয়ে উকি মারতে পারে। 

তারপর আমিও ঘুমিয়ে পড়লাম। মধ্যরাতে কারো কান্নার আওয়াজ শুনে ঘুম ভাঙল আমার। দেখি আমার শ্বশুর বাচ্চা ছেলের মতে "কুই কুই" করে কান্না করতেছে। 

--কি হয়েছে?" জিজ্ঞেস করলাম আমি।

শ্বশুর মশায় পেটে হাত দিয়ে বলল: পেটে চাপ ধরেছে।"

আমি তার শেকল খুলে দিয়ে বললাম:

--ও আচ্ছা,  ঠিক আছে,  আপনি নিচে যান। ওখানেই বাথরুম আছে। বাথরুম সেরে সোজা চলে আসবেন।"

--ঠিক আছে....

শ্বশুর মশায় নিচে গেলেন। আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম তার জন্য।  এই ভূতেরা আবার টয়লেটে ঢুকলে সহজে বের হয়না।

অনেক্ষণ অপেক্ষা করে শ্বশুরকে ডাকতে যাবার জন্য বেড থেকে নামলাম। হঠাৎ ছোট ভাবীর জোরে চিৎকার শুনা গেলো। আমি তাড়াতাড়ি বের হলাম। ঘটনা কি বুঝতে আমার দেরি হলোনা। 

শ্বশুর মশায় নিজের কাজ সেরে ওদের রুমে উকি মারছিল। তখন ছোট ভাবিও বাথরুমে যাওয়ার জন্য বের হলো। আমার শ্বশুরের আসল চেহারা দেখে চিৎকার দিয়ে উঠে। 

আমি শ্বশুরকে তাড়াতাড়ি রুমে পাঠায় দিলাম। তারপর ছোটভাবিকে বাথরুমে নিয়ে মাথায় পানি ঢাললাম।  ততক্ষণে বাড়ির সবাই এসে গেছে। 

ছোট ভাবির হুশ ফিরে এলে সবাই জিজ্ঞেস করে: কি হয়েছিল?"

ছোট ভাবি তখনও ভয়ে কাঁপতেছিল। কাঁপতে কাঁপতে বলল: আমি একটা ল্যাংটা ভূত দেখেছি...."

আমি তাড়াতাড়ি বললাম: হয়তো ভাবি চোখে ভুল দেখেছে। হ্যালুসিনেশন হয়ছে। যাও, সবাই ঘুমাতে যাও।"

কথা যেন আর না বাড়ে তাই তাড়াতাড়ি উপরে চলে এলাম।

রুমে এসে রেগে উঠে শ্বশুরকে বললাম: আপনি যে কাজটা করলেন ঠিক হয়ছে?"

শ্বশুর মশায় বললেন: আমি কি জানতাম  তারও এই সময়ে বাথরুম পাবে?"

--তো আপনি ওদের রুমে উকি মারছিলেন কেন?"

--দেখছিলাম ওরা কিভাবে ঘুমায়....

--ওরা কীভাবে ঘুমায়, তা দেখে আপনি কি করবেন? আর টয়লেট সেরে কাপড় পরেননি কেন?

--আমি তো ভাবলাম সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে, তাই ল্যাংটা থাকলেও সমস্যা নেই।" 

শালার ভূতের উপর অনেক রাগ হলো। এই ভূতকে কালকেই বিদায় করতে হবে। যতদিন ভাবিরা এখানে থাকবে, ততদিন আনা যাবেনা এখানে। 

পরদিন শ্বশুর মশায়কে নিয়ে একটা তান্ত্রিকের কাছে গেলাম। তান্ত্রিকরা ভূতদের নিজেদের আয়ত্তে রাখতে পারে। শ্বশুর মশায় প্রথমে যেতে চাইছিল না, পরে বললাম যে, তাকে মানুষ বানাতে নিয়ে যাচ্ছি। তখন রাজি হলো সে। 

তান্ত্রিকের কাছে গিয়ে বললাম: তান্ত্রিক মশায়, উনি আমার ভূত শ্বশুর,, আপনি কি উনার নাক,  চোখ গুলো ঠিক করে মানুষের মতো করে দিতে পারবেন?"

তান্ত্রিক মশায় বললেন: তুমি কোন চিনতা করোনা। ওকে কয়েকদিন আমার কাছে রেখে যাও।"

আহ! বাঁচা গেলো। শ্বশুর মশায়কে ওখানে রেখে চলে এলাম। যতদিন ভাবিরা বাসায় থাকবে, ততদিন ওখানেই থাকুক বদমাইশটা।

যে রাতগুলো তার সাথে থেকেছি একটা রাতও ভালোভাবে ঘুমাতে পারিনি। শ্বশুর মশায়কে তান্ত্রিকের কাছে রেখে আসার পরের দুইটা রাত ভালোভাবে ঘুমালাম। কিন্তু তৃতীয় রাতে আবার খারাপ সময় গেলো আমার। কোথা থেকে যেন  একটা মোরগ এসে বাড়ির ছাদে "কুক্কুরু কু, কুক্কুরু কু," করছিল অনবরত। আমার ঘুম ভেঙে যায়। ঘড়িতে সময় দেখলাম, ভোর হতে আরো দেরি আছে। তাই আবার ঘুমাতে চেষ্টা করলাম।

কিন্তু মোরগটা একনাগাড়ে ডাকতে লাগল। আর ঘুমাতে পারলামনা বাকি রাত। সকালে রুম থেকে বের হয়ে ছাদে গেলাম। দেখলা মোরগটা ওখানে খাবার খুঁজে খুঁজে খাচ্ছে। আমি একটা ঢিল ছুড়ে মারলাম ওটার দিকে। মোরগটা কক কক করে উঠল। আমাকে দেখে আমার দিকে ছুটে এল। লাফ দিল আমার উপর।  এ কি রে, এটা দেখছি সংগ্রামী মোরগ। তাড়াতাড়ি ছাদের দরজা বন্ধ করে দিলাম। এই মুহূর্তে একটা মোরগের সাথে যুদ্ধ করার কোন ইচ্ছে আমার নেই। 

নিচে এসে দাঁত ব্রাশ করছিলাম। মা আমাকে ডেকে বলল: রানা, তোর ভাবিরা  এসেছে, কিছু ভালোমতো খেতে দিতে পারিনি। যা একটু বাজার করে নিয়ে আয়।"

আমার তখন মনে পড়ল মোরগটার কথা। সারারাত আমাকে জালায়ছে। ওর মাংস খেয়ে প্রতিশোধ নেব। তাই বললাম: মা, আমি তো গতরাতেই অনেক বড় একটা দেশি মোরগ কিনে এনেছি। ছাদে আছে ওটা, তোমাদের সারপ্রাইজ দিব বলে বলিনি। যাও, ওটা জবাই কর।" 

--আচ্ছা,  তাহলে তুই কিছু পেয়াজ রসুন, আর তেল কিনে এনে দে।"

--ঠিক আছে মা, আমি একটু ফ্রেশ হয়ে নিই। তারপর এনে দিচ্ছি,  আর শুন, মোরগটা সুন্দর করে রান্না করবা কিন্তু। মজা করে সবাই মিলে খাব আজ।

--আচ্ছা,  ঠিক আছে পাগলা।" মা হেসে দিল।

আমি ছাদে উঠে মোরগটা ধরে দুই ভাবির হাতে তুলে দিয়ে বললাম: এটাকে ধারালো ছুরি দিয়ে জবাই কর। মাংসগুলো বড় বড় করবে।"

দুইভাবী হেসে উঠে বলল: ঠিক আছে, ব্যাক সাইডটা তোমার জন্য বরাদ্দ থাকবে।"

আমি বললাম: যে সাইড হবে হোক, আগে জবাই কর।"

মোরগটা তখন কক কক করে চিৎকার করতেছিল। আমি খুশি মনে বাথরুমে ঢুকে ফ্রেশ হলাম। তারপর একটা টি-শার্ট গায়ে দিয়ে বের হলাম বাজার করতে। পথে তান্ত্রিক মশায়ের সাথে দেখা।

--কি ব্যাপার, তান্ত্রিক মশায়, আপনি হঠাৎ এখানে?" অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম।

--আরে আর বলোনা, তোমার শ্বশুরটা বেশি কথা বলে, তাই তোমার শ্বশুরকে আমি মোরগ বানায় রাখছিলাম।  এখন ঐ মোরগটাকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছিনা।"

তান্ত্রিকের কথা শুনে আমি চমকে উঠলাম। জিজ্ঞেস করলাম: মোরগটা কি রঙের?"

--লাল রঙের।" তান্ত্রিক জবাব দিলেন।

সর্বনাশ! আমার একমাত্র শ্বশুরকে আমি নিজ হাতে জবাই করতে পাঠালাম। এতক্ষণে হয়তো সব শেষ। তাড়াতাড়ি দৌড় দিলাম বাসার দিকে......

(চলবে...)

#পেত্নীর_সাথে_ঘর_সংসার_পর্ব_৯

হঠাৎ পুরো হাসপাতালে "ভূত ভূত" বলে চিৎকার শুরু হলো।  কেউ কেউ ভয়ে পালিয়ে গেলো।   আমার শ্বশুর মানচিত্র দেখায় দিয়ে সবার সামনে দিয়ে বেরিয়ে গেলো। আমি এমন ভান করতে লাগলাম যেন ওকে আমি চিনিই না। শ্বশুর মশায় যেন আমাকে দেখতে না পায়, সেজন্য লোকজনের আড়ালে ছিলাম। সবার সাথে তাল মিলিয়ে আমিও  "ভূত ভূত" বলে চিৎকার করলাম কিছুক্ষণ।  তারপর পরিস্থিতি শান্ত হলে আস্তে করে বের হয়ে বাসায় চলে এলাম। 

শ্বশুরের সাথে আমার আবার দেখা হয়  রাতে। আমার রুমের জানালায় মুখ লাগিয়ে সে আস্তে আস্তে করে "জামাই জামাই" বলে ডাকছিল আমাকে। আমি  দরজা খুলে বের হলাম। তাকে সবার চোখ ফাকি দিয়ে আমার রুমে নিয়ে আসলাম আবারও। 

তারপর রাগ দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলাম: শ্বশুর মশায়, আপনি টয়লেট থেকে ল্যাংটা বের হয়ছেন কেন?"

শ্বশুর মশায় জবাব দিলেন: আমি  ভুলে গিয়েছিলাম।  আসলে ল্যাংটা থাকতে থাকতে অভ্যাস হয়ে গেছে। তাই টয়লেট থেকে বের হওয়ার সময় কাপড় পরতে মনে ছিলনা।"

--আচ্ছা যাইহোক,  এখন থেকে সবসময় কাপড় পরে থাকবেন, মনে থাকে যেন।

--আচ্ছা...  এখন আমাকে কিছু খেতে দাও।"

আমি তখন আমার জন্য বরাদ্দ রাতের খাবারগুলো এনে শালার ভূতকে খাওয়ালাম। তারপর সেই রাতটাও আগের রাতের মতো কাটালাম। 

পরদিন শ্বশুর মশায়কে নিয়ে অন্য একটা হাসপাতালে গেলাম। কক্সবাজার সেন্ট্রাল হসপিটাল। ওখানেও দেখি ডাক্তার হরিপদ ব্যানার্জী আছে। উনাকে দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম: ডাক্তার বাবু, আপনি এখানে?"

হরিপদ জবাব দিলেন: হ্যা, আগের হাসপাতালে ভূত আছে, তাই এখানে চলে এলাম। আমি আবার ভূতকে বেশি ভয় পাই।"

ডাক্তার হরিপদের কথা শুনে আমার শ্বশুর হঠাৎ "হা হা" করে উঠলেন। আমি তাকে হাসি থামাতে বললাম।

এরপর ডাক্তার আমার শ্বশুরকে  অপারেশন রুমে নিয়ে গেলেন। আমি বাইরে অপেক্ষা করতে লাগলাম। এখানে দাঁড়িয়ে ওদের কথা শুনতে লাগলাম। ডাক্তার হরিপদ বললেন: মুখ থেকে রুমালটা সরান, ডাক্তারকে লজ্জা পেতে হবেনা।"

এরপর কিছুক্ষণ কোন কথা শুনা গেলনা। কিছুক্ষণ পর ডাক্তারে কথা শুনা গেলো আবার: কি হল? রুমালটা সরান, ওটা না সরালে নাকের অপারেশন করব কী......" ডাক্তার কথাটা শেষ না করেই "আ...আ...আ..." করে চিৎকার দিয়ে উঠলেন। আমি তাড়াতাড়ি গেলাম ওখানে। দেখলাম,  আমার শ্বশুরের চেহারা দেখে ডাক্তার হরিপদ বেহুশ হয়ে পড়ে আছে। সর্বনাশ। শ্বশুরকে বললাম: শ্বশুর মশায়, আপনি মুখে রুমাল লাগিয়ে এখানে দাঁড়ান,  আমি অন্য একটা ডাক্তার ডেকে নিয়ে আসছি।"

শ্বশুর মশায় মাথা নেড়ে সম্মতি দিলেন।

আমি অন্য একটা ডাক্তার ডাকতে গেলাম। ডাক্তার নিয়ে এসে দেখলাম,  আমার শ্বশুরের কাপড় পরে ডাক্তার হরিপদ নিচে পড়ে আছে, আর আমার শ্বশুর নেই। 

অন্য ডাক্তারটা ডাক্তার হরিপদকে দেখতে লাগলেন, আর আমি শ্বশুর মশায়কে খুঁজতে লাগলাম। খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে গেলাম একটা কেবিনে, সেই কেবিনে একটা সুন্দরী মেয়ে রোগী ছিল। 

আমার শ্বশুর ডাক্তারের পোশাক পরে, মেয়েটার হাত-পা টিপে টিপে দেখতেছিল। মুখে রুমালটা ছিল তার। সেই রুমালটা সরিয়ে আমার শ্বশুর মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করল: এখন কেমন লাগতেছে তোমার?"

মেয়েটা আমার শ্বশুরের দিকে তাকিয়ে জবাব দিতে যাবে, তখন "আ...আ...আ" করে চিৎকার দিয়ে উঠল। তারপর বেহুশ! আমি তাড়াতাড়ি শ্বশুরকে বললাম: শ্বশুর মশায়, পালান....নইতো আজ আমার একদিন কি আপনার দশ থেকে বার দিন।" শ্বশুরের হাত ধরে টানতে টানতে কোনমতে পালিয়ে এলাম হাসপাতাল থেকে। বুঝলাম, হাসপাতালে কাজ হবেনা।  শ্বশুরের ব্যবস্থা অন্যভাবে করতে হবে।

সারাদিন শ্বশুরকে নিয়ে এদিকে ওদিকে ঘুরে কোন ব্যবস্থা করতে না পেরে  রাতের বেলায় চুপিচুপি আমার রুমে ঢুকলাম। তখন সামনে পড়ে গেলাম আমার মা ও আরও কয়েকজন মেহমানের সামনে।  ভাগ্যিস শ্বশুরের মুখে রুমাল ছিল, নয়তো আম্মুর তৃতীয় বারের মতো হার্ট এট্যাকটাও হয়ে যেত এতক্ষণে। 

শ্বশুরকে দেখে মা বললেন: এটা কে?"

আমি বললাম: মা,  ও আমার বন্ধু, আজ আমার সাথে থাকবে।" 

আমার শ্বশুর মশায় তখন আমার গলায় হাত দিয়ে বন্ধু মতো করে বলল: হ্যা খালাম্মা, আমরা বন্ধু।" 

মা বললেন: ও, কিন্তু রানা, আজ তোর রুমে তোর ভাবিরা থাকবে। ওরা আজ বেেড়াতে এসেছে। কয়েকদিন থাকবে। তুই তোর বন্ধুকে নিয়ে উপরের ঘরে থাকিস।"

আমি ভাবিদের দিকে তাকালাম। অনেকদিন পর বেড়াতে এসেছে এরা। আমার মামাত দুই ভাই এর বউ। এরা আসলেই আমার রুমটা তাদের দখলে চলে যায়। 

আমাকে চুপ থাকতে দেখে বড় ভাবি বললেন:- কি দেবর বাবু, রুম দখল করেছি বলে কি রাগ হচ্ছে?"

--না, না ভাবি তোমরা আমার রুমে যতদিন খুশি আরাম কর। তবে আগের মতো একটু কম জালায়ও আমাকে।"

তখন ছোটভাবি আমার কান ধরে বললেন: এবার বেশি করে জালাব বলে এসেছি....."

হঠাৎ আমার শ্বশুর বলে উঠলেন: ভাবি, আমাকেও একটু কানটানা দেন। কতদিন কারো কানটানা খাইনা।"

শ্বশুরের কথা শুনে অনেক রাগ হলো। তাড়াতাড়ি তাকে পিঠে একটা হাত দিয়ে মেরে বললাম: চল দোস্ত, আমরা উপরের ঘরে যায়। এই ভাবি দুইটা তোকেও পাগল করে দেবে।"

শ্বশুর মশায় বললেন: আমি পাগল হতে রাজি আছি, দেখি কেমন পাগল বানাতে পারে আমাকে......"

(চলবে........)

#পেত্নীর_সাথে_ঘর_সংসার_পর্ব_৮

পরদিন শ্বশুর মশায় এর জন্য শার্ট প্যান্ট কিনলাম। চেহারা নাক পর্যন্ত ঢাকার জন্য একটা রুমাল কিনলাম, পায়ে দেয়ার জন্য জুতা আর একটা সানগ্লাস কিনলাম, যাতে তার উল্টানো চোখগুলো দেখে কেউ ভয় না পাই।

শ্বুশুর মশায় বললেন: জামাই এসব টাকা দিয়ে কেনার কি দরকার ছিল, আমাকে দেখলে তো এগুলো এমনিতেই দিয়ে দিতো।"

শ্বশুর মশায় এটা অবশ্য মিথ্যে বলেনি, কারণ এরকম বিরাট বিরাট রেকর্ড আমার শ্বশুরের আগে থেকেই আছে। সে সবাইকে ভয় দেখিয়ে তাদের জিনিসপত্র হাতিয়ে নিতো।

শ্বশুর মশায় এবার শার্ট প্যান্ট, জুতা পরে, মুখে রুমাল লাগিয়ে, চোখে চশমা লাগাল। তারপর কিছুক্ষণ কোমরে হাত দিয়ে পায়চারী করে আমার মুখোমুখি দাঁড়ালেন।  তারপর জিজ্ঞেস করলেন: জামাই, আমাকে গতরাতের ইংলিশ সিনেমার নায়কটার মতো লাগতেছে তাইনা? 

শালার ভূতের কথা শুনে মাথায় খানদানী রাগ উঠে গেলো। ইচ্ছে হলো কষে একটা থাপ্পড় লাগায়। নিজেকে সামলিয়ে বললাম: আরে শ্বশুর মশায়, আপনাকে তো তার চেয়ে বড় হিরো মনে হচ্ছে এখন।"

শ্বশুর এবার বুক ফুলিয়ে বললেন: শুনেছি তোমাদের দেশের চলচ্চিত্রের অবস্থা খুব খারাপ যাচ্ছে, তাই ভাবছি কয়েকটা বাংলা সিনেমা করে, বাংলা সিনেমাকে এগিয়ে নিয়ে যাব। আচ্ছা জামাই, বাংলাদেশ কোন সুন্দরী নায়িকা আছে?"

--হ্যা, পরীমনি আছে....

-ওহ, তাহলে পরীমনির সাথেই আমি সিনেমা করব, ফাইনাল।

আর তুমি পরীমনিকে সুখবরটা বলে দিও। বলবা, সে আমার সাথে সিনেমা করার সুযোগ পেয়েছে, আমি তাকে আমার নায়িকা হিসেবে বেছে নিয়েছি।"

বুঝলাম এই বেটাকে এখনই না থামালে তার চাপার মাত্রা হিমালয়ের শীর্ষে উঠে যাবে। তাই বললাম: শ্বশুর মশায় এবার চলেন, হাসপাতালে যেতে হবে।"

--ওহ, চল চল.... আমি কিন্তু ডাক্তার হিসেবেও অনেক ভালো। রোগীর দিকে একবার তাকালেই সে সুস্থ হয়ে যায়। কিন্তু আমি যে ডাক্তার,  তোমাকে কে বলল? ও বুঝেছি, কারো প্রতিভা চাপা থাকেনা। কিন্তু জামাই, কার চিকিৎসা করতে হবে? রোগী কে?"

--রোগী আপনি নিজেই।"

--কি? আমি রোগী? কি হয়েছে আমার?"

--আপনার নাক কেটে অপারেশন করা হবে।

--মানে? জামাই, তুমি কিন্তু আমার সাথে বেয়াদবি করতেছ। আমার প্রেস্টিজ নিয়ে কথা বলতেছ। ভুলে যেওনা আমি তোমার শ্বশুর। তাছাড়া আমি হলাম সব ভূতের রাজা" শ্বশুর মশায় একটু রেগে উঠলেন। 

আমি বললাম: হুমমম, রাজ্য বিতাড়িতট ভূতের রাজা আপনি। শ্বশুর মশায়, এখানে থাকতে হলে আপনাকে একট ু তো মানুষের মতো হতে হবে, নাকি? নইলে তো থাকা যাবেনা।"

--কিন্তু নাক কাটলে ব্যথা পাব না তো।"

--কেন? আপনি জানেননা ব্যথা পাবেন কি পাবেননা? আপনি না বিশিষ্ট ডাক্তার? আপনার তো জানার কথা।"

--ও তাইতো, হ্যা জামাই চল.....

শ্বশুর মশায়কে নিয়ে হাসপাতালে আসলাম। উনি উঁকি মেরে হাসপাতালের নার্সগুলোকে দেখতে লাগলেন। আমি তাকে  টেনে নিয়ে এক ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম। ডাক্তার হরিপদ ব্যানার্জী চশমার ফাক দিয়ে সরাসরি নজর দিলেন আমার শ্বশুরের দিকে। আমার শ্বশুর ডাক্তারের দিকে হাত বাড়িয়ে বললেন: আমিও আপনার মতো ডাক্তার....."

আমি তাড়াতাড়ি শ্বশুরকে সামলে নিয়ে ডাক্তারকে ইশারায় বুঝিয়ে দিলাম ওর মাথায় প্রবলেম আছে। 

ডাক্তার হেসে বললেন: আরে ওরকম কতপাগলকে আমি মানুষ করেছি অপারেশন করে। ওকে কেবল আমার হাতে ছেড়ে দাও।"

আমি বললাম: উনার নাকটা একটু বেশি লম্বা তাই অর্ধেক কেটে একটু অপারেশন  করে দিতে হবে নাকে।"

--আরে কোন সমস্যা না, আমি পাগলের ডাক্তার, নাকের ডাক্তার, দাঁতের ডাক্তার, চোখের ডাক্তার, সব ধরণের ডাক্তার আমি.....

আমি কৌতূহলী হয়ে জিজ্ঞেস করলাম: ও আপনি চোখের ডাক্তারও? উনার চোখেও সমস্যা আছে। একটু অপারেশন করবেন প্লিজ?"

ডাক্তার হরিপদ বললেন: হুমম, অবশ্যই, তার আগে রোগীকে ভালো করে দেখতে হবে। আপনারা সামনের রুমে গিয়ে অপেক্ষা করুণ, একটু পর রোগীকে ডাকা হবে।"

শ্বশুর মশায় বললেন: আমিও কিন্তু ডাক্তার,  ভুল চিকিৎসা করলে ধরে ফেলব।"

আমি তাড়াতাড়ি শ্বশুরকে নিয়ে বেরিয়ে আসলাম। ওয়েটিং রুমে বসে টিভি দেখতে লাগলাম।  ডিসকভারি চ্যানেল চলছিল ওখানে। আমার শ্বশুর চিৎকার করে বললেন: এই, চ্যানেলটা পাল্টিয়ে একটা ইংলিশ সিনেমা দাও।"

আমি শ্বশুরের মুখটা চেপে ধরে বললাম: চুপ করুন শ্বশুর মশায়।"

তিনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন: জামাই সকাল থেকে তো কিছুই খাইনি, খাবারের ব্যবস্থা কর।"

--ঠিক আছে, আমি খাবার আনতে যাচ্ছি,  আপনি চুপচাপ এখানে বসে থাকুন। খবরদার,  কোন কথা বলবেননা।"

--ঠিক আছে, বলবনা...."

আমি খাবারের জন্য বাইরে গেলাম। ১৫ মিনিট পর খাবার নিয়ে ফিরে এলাম। আশেপাশে তাকিয়ে শ্বশুর মশায়কে খুঁজতে লাগলাম। কোথাও দেখতে পেলামনা। একজনের কাছে জানতে পারলাম, শ্বশুর টয়লেটে গেছে। 

যাক বাবা বাঁচা গেলো। আমি চেয়ারে নিশ্চিন্তে বসলাম। হঠাৎ একটা মেয়ের জোরে চিৎকার শুনে টয়লেটের দিকে তাকালাম।  দেখলাম, একটা তরুণী মেয়ে বেহুশ হয়ে পড়ে আছে। আর শার্ট প্যান্ট, রুমাল, চশমা হাতে নিয়ে মহিলা টয়লেট থেকে ল্যাংটা হয়ে বের হচ্ছে আমার শ্বশুর......

(চলবে......)

#পেত্নীর_সাথে_ঘর_সংসার_পর্ব_৭

ইদানীং শুনা যাচ্ছে রাত হলে নাকি কি একটা জন্তু দেখা যায়। মানুষের ঘরে ঢুকে চুরি করে। কেউ ধরতে গেলে হাত ফসকে বেরিয়ে যায়। কেউ ধরতে পারেনা তাকে। পারদের মতো গলে যায়। সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ল খবরটা। 

সন্ধযা হলেই লোকের ঘরে ঘরে দরজা বন্ধ হয়ে যায়। যদি ঢুকে পড়ে জন্তুটা। ছোট ছোট বাচ্চারা সন্ধ্যার পর বের হয়না ভয়ে। 

এমন পরিস্থিতিতে একদিন আমি সন্ধ্যার পর বের হলাম দরজা খোলা রেখে। জন্তুটা ঢুকে যায় আমাদের বাসায়। হঠাৎ শুরু হয় চিৎকার চেচামিছি। 

ঘটনা বুঝতে আমার দেরি হলনা। দৌড়ে গেলাম বাড়ির দিকে। দেখলাম সবাই জন্তুটাকে ধরার চেষ্টা করতেছে। আর জন্তুটা সবার হাত ফসকে পারদের মতো  বেরিয়ে যাচ্ছে। জন্তুটা আমার পাশ দিয়ে  দৌড় দিল। অনেকদিন পর দেখলেও চিনতে পারলাম,  এটা আমার ল্যাংটা  শ্বশুর মশায় ছাড়া আর কেউ নয়।  আমিও দৌড় দিলাম শ্বশুরের পিছু পিছু। 

"শ্বশুর মশায়,  শ্বশুর মশায়" বলে চিৎকার করলাম কয়েকবার। আমার গলা চিনতে পেরে আমার খানদানি শ্বশুর মানচিত্র মেলে ধরে দাড়িয়ে পড়ল। 

আমাকে দেখে শ্বশুর মশায় খুশি হয়ে বলল: আরে জামাই যে.....তোমাকে দেখে খুশি হলাম।"

আমি বললাম: আরে রাখেন আপনার খুশি, আপনি সারা শরীরে তেল মেখে, বানরের মতো লাফিয়ে এসব কি করছেন? কেউ যদি জেনে যায় আপনি আমার শ্বশুর, তাহলে আমার খানদানি মর্যাদা কোথায় গিয়ে ডুবে যাবে আপনি জানেন?"

শ্বশুর মশায় কাঁচুমাচু করে বলল: কি করব জামাই? আমাকে ভূত রাজ্য থেকে বের করে দিছে তাই এখানে এসে এসব করতে হচ্ছে।"

অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম: কি বলছেন? আপনি না ভূতের রাজা, আপনাকে বের করে দেবার সাহস কার।"

--ভূতের মেয়েগুলো প্রতিবাদ করেছে। আমি নাকি তাদের বেশি বগিটিজিং করি। তাই সবাই এক হয়ে আন্দোলন করে। আমার জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে। তখন আমি পালিয়ে আসি পৃথিবীতে।"

--ঠিক আছে শ্বশুর মশাই,  যা হবার হয়ছে। এখন থেকে আপনি আমার সাথে থাকবেন। কিন্তু এভাবে ল্যাংটা না, আপনাকে মানুষের মতো হতে হবে।

--কীভাবে?

--সেই ব্যবস্থা আমি করব। আর আপনাকে যে আসার সময় প্যান্ট বানিয়ে দিয়েছিলাম, প্যান্টগুলো কই, এভাবে ল্যাংটা থাকেন কেন?

আমার কথা শুনে শ্বশুর মশাই বললেন: প্যাণ্টগুলো কি এতদিন থাকবে? ওগুলো তো তখনই ছিড়ে গেছে।"

মনে মনে বললাম: শালার শ্বশুর, ভূতের  মেয়েদের সামনে মানচিত্রে বাতাস লাগানোর জন্য দিনে হাজার বার প্যান্ট খুললে তো প্যান্ট ছিড়বেই।"

কথাটা আর প্রকাশ না করে বললাম: উফ,, আজ অমাবস্যা হলে ভালো হতো.....

--কেন জামাই?"

--আরে অমাবস্যা হলে অন্ধকারে আপনাকে  দেখতে পেতামনা, আর  আপনার খানদানি মানচিত্রও দেখতে হতোনা। কালকের মধ্যেই আপনার শার্ট প্যান্টের ব্যবস্থা করতে হবে।"

--উফ, ইদানীং অনেক গরম পড়তেছে তাইনা জামাই.... "

শ্বশুর মশায় কথাটা কেন বলছে আমি আন্দাজ করতে পারলাম। কাপড় না পড়ার চিন্তাভাবনা করতেছে। তাই বললাম:-

--কোথায় গরম?  আমার তো আরও ঠান্ডা লাগতেছে। আপনি শরীরে তেল মেখেছেন তাই গরম লাগতেছে।"

আমার কথা শুনে আসন্ন ল্যাংটা বিরোধী অভিযানের কথা চিন্তা করে শ্বশুর মশাই মুখটা লাল করে ফেলল। এদের আবার মন খারাপ হলে মুখ লাল হয়ে যায়। 

সেটাকে গুরুত্ব না দিয়ে শ্বশুর মশায়কে নিয়ে আমার রুমে এলাম সবার নজর এড়িয়ে। শ্বশুর মশায়কে বললাম: শ্বশুর মশায়,  আপনি এখানে থাকুন, রুম থেকে একদম বের হবেননা। আপনি তো চুরি করে খেয়েছেন। এবার আমি খেয়ে আসি।"

শ্বশুর মশায় মাথা নেড়ে সায় দিলেন।

এরপর আমি রুম থেকে বেরিয়ে দরজায় তালা মারলাম,  বেটা আবার পালিয়ে যেতে পারে, ভূতদের বিশ্বাস নেই। 

খাওয়ার সময় মা আমাকে জিজ্ঞেস করল: কি রে,  তুই এখানে খেতে এসেছিস,  তাহলে তোর রুমে টিভি একটা ছেড়ে দিয়ে এসেছিস কেন?"

--কই নাতো...." বলার পর আমারও খেয়াল হলো হ্যা টিভির আওয়াজটা আমার রুম থেকেই তো আসতেছে। নিশ্চয়ই ঐ শালার শ্বশুর এর কাজ এটা।

মা বলল: এই তো শুনতে পাচ্ছিস না? দাড়া আমি দেখে আসি কে টিভি দেখতেছে।"

সর্বনাশ!  মা যদি দরজার ফুটো দিয়ে ঐ ল্যাংটা ভূতকে দেখে তাহলে তো হার্ট এ্যাটাক করে মারা যাবে। অলরেডি মা দুইবার হার্ট এ্যাটাক করেছে।

তাড়াতাড়ি ভাতের প্লেট রেখে দৌড়ে এসে মাকে আটকালাম।

বললাম: মা মা মা, ওটা আমি ভুলে ছেড়ে দিয়ে এসেছি, দাঁড়াও আমি অফ করে দিয়ে আসতেছি। 

মা একটু রেগে বলল: এত বেখেয়ালি কেন তুই? যা, তাড়াতাড়ি টিভি বন্ধ করে ভাত খেয়ে যা।"

আমি দেরি করলামনা। তাড়াতাড়ি গিয়ে  তালা খুলে ভেতরে ঢুকলাম, দেখলাম শ্বালার শ্বশুর পায়ের উপর পা তুলে দিয়ে,  খানদানী স্টাইলে বসে,  রিমোটটা হাতে নিয়ে টিভির সামনে ধরে টিভি দেখতেছে।"

আমার রাগ বেড়ে গেলো। আমাকে দেখে শ্বশুর মশায় বললেন: ও জামাই, এসো, দেখ কত সুন্দর একটা ইংলিশ সিনেমা চলতেছে।"

তার কথা শুনে আমি হাসব নাকি কাঁদব বুঝতে পারলামনা। বেটা ভূত, আবার ইংলিশ সিনেমা দেখতেছে, হাবভাব দেখে মনে হয় ইংলিশে তার কয়েকটা পি.এইচ.ডি করা আছে.....

তাড়াতাড়ি টিভি বন্ধ করে একটু মেজাজ দেখিয়ে বললাম: শ্বশুর মশায়,  টিভি একদম ছাড়বেননা।"

তারপর আর অপেক্ষা না করে আবার দরজায় তালা লাগিয়ে বাকি খাবার খেতে এলাম। 

খাওয়া শেষ করে, ফ্রেশ হয়ে রুমে এলাম। দেখলাম আমার শ্বশুর মশায় ঘুমিয়ে পড়েছে আমার খাটে। আমি তাকে তুলে খাটের নিচে শুয়ে দিলাম। তারপর লাইট অফ করে আমিও বেডে শুয়ে পড়লাম। কিছুক্ষণ পর আমার চোখের কোণে একটু একটু ঘুম এলো, ঠিক তখনই শুরু হলো শ্বশুরের খানদানী নাক ডাকা। সর্বনাশ! এভাবে নাক ডাকলে তো বাড়ির সবাই বোমা হামলা হচ্ছে মনে করে ছুটে আসবে। তাড়াতাড়ি বেড থেকে নেমে শ্বশুরের লম্বা নাকটা চেপে ধরলাম। নাক ডাকা অফ হল। যখন নাক ছেড়ে দিলাম, আবার শুরু হল নাক ডাকা।  আবার চেপে ধরলাম নাক। শ্বশুর তখন ঘুমের ঘোরে বলল: নিচে ঘুমালে আমি নাক ডাকি,  খাটে ঘুমাতে হয়।"

তার কথা শুনে ইচ্ছে হলো তার লম্বা নাকটা ব্লেড দিয়ে কেটে বাঁশি বাজায়। মনের ইচ্ছাটা মনেতে চেপে বললাম: ঠিক আছে শ্বশুর মশায়, আপনি খাটে আমার পাশে শুইবেন, আসেন...

শ্বশুর মশায় বলল: ঘুমের মধ্যে আমি হেটে কিভাবে খাটে উঠব? তুমি আমাকে যেভাবে খাট থেকে নামাইছ, সেভাবে তুলো...."

ঘটনা আর লম্বা না করে বাধ্য হয়ে শ্বশুরকে খাটে শুয়াইলাম আমার পাশে.....

তারপর রাতটা কোনমতে পার করলাম.....

(চলবে........)😊

#পেত্নীর_সাথে_ঘর_সংসার_পর্ব_শেষ_পর্ব_৬

সকালে বউ এর ডাকে ঘুম ভাঙল।  সে সেজেগোজে রেডি। আজ তার সুন্দরী প্রতিযোগীতা। 

--এই আমাকে কেমন লাগতেছে?" কৌতূহলী হয়ে জিজ্ঞেস করল বউ।

--তোমাকে তো বরাবরই সুন্দর লাগে। সাজগোজ না করলেও চলত। কারণ, তোমার মতো সুন্দরী আর কেউ আছে নাকি?"  ঘুমের ঘোর তখনো কাটেনি আমার।

--এই ভালো করে চোখ মুছে বলনা,  আমাকে কেমন লাগতেছে?"

আমি চোখ মুছে বললাম:- বাহহ, এ আমি কি দেখছি,  সাক্ষাৎ অপ্সরী! এত রূপ তোমার?"

বউ লজ্জা পেয়ে বলল: যাহহ, ওভাবে বলোনা, আমার লজ্জা করে। আচ্ছা আমি যায়, আমি যদি প্রথম পুরস্কার পাই, তাহলে পুরস্কারটা তোমার হাতে তুলে দেব।" বলেই সে আমার ডান গালে একটা কিস করে ঘর থেকে হল।

মনে মনে অনেক রাগ হল আমার। শালির ভূত্নী যখন তখন কিস করিস আমার খানদানি গালে। পানি দিয়ে অনেক্ষণ ঘষলাম ডান গালটা।  তারপর ঘরের বাইরে আসলাম। দেখলাম বাইরে খালি চেয়ারটা পড়ে আছে,  শ্বশুর মশায়কে কোথাও দেখতে পেলামনা। অথচ প্রতিদিন ঐ চেয়ারে বসে সে চোখে বাইনোকুলার লাগিয়ে ভূতের মেয়েদের বগিটিজিং করত। আজ তার অনুপস্থিতি দেখে ঘটনাটা আঁচ করতে পারলাম। শ্বশুরের ঘরের জানালা দিয়ে দেখলাম,  শ্বশুর তার মানচিত্রটা চেপে ধরে "কুই কুই" করে কান্না করতেছে। আমি হেসে চলে এলাম আমার ঘরে। দরজা আটকে দিলাম। বাচ্চাটা ঘুমাচ্ছে।  জেগে থাকলে "কুয়া কুয়া" করে আমাকে জালিয়ে মারত। 

একটুপর দরজায় ঠকঠক আওয়াজ হল।  বুঝলাম,  শাঁকচুন্নি এসেছে। আমি দরজা না খুলে ঘুমের ভান করে থাকলাম। দরজায় তখন একনাগাড়ে ঠকঠক আওয়াজ হতে লাগল। আর সহ্য করতে না পেরে দরজা খুললাম। দেখলাম শাঁকচুন্নি না, আমার শ্বশুর মানচিত্র চেপে ধরে দাড়িয়ে আছে। দরজা খুলার সাথে সাথে ভেতরে ঢুকে দরজা আটকে দিল। আমি ভয় পেয়ে গেলাম, ভাবলাম হয়তো শ্বশুর মশায় ঘটনাটা বুঝতে পেরে আমাকে মারতে এসেছে। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে শ্বশুর মশায় বলল:

 --রানা বাবাজি, একটা উপকার করবে?"

--কি উপকার শ্বশুর মশায়?

--তুমি যে আমার জন্য একটা প্যান্ট বানায়ছিলে, প্যান্টটা আমার লাগবে।

--কেন শ্বশুর মশায়?

--কোন কারণ না। ল্যাংটা থাকতে আর ভালো লাগেনা। প্যান্টটা দাও।

আমি শ্বশুরের মানচিত্রের দিকে তাকিয়ে বললাম: কিন্তু শ্বশুরমশায়, আপনার ওখানে এভাবে ফোলা কেন? কোথায় আঘাত পেয়েছেন?

--ও কিছুনা,  তুমি প্যান্টটা দাও।

--না, আগে বলতে হবে। তারপর প্যান্ট দেব।"

শ্বশুর মশায় আমাকে সব খুলে বলল। মনে মনে হাসতে লাগলাম আমি। এটা যে আমি করেছি শ্বশুর মশায় বুঝতে পারেনি। শ্বশুর বলল: ঘটনাটা কাউকে বলিওনা।

--ঠিক আছে, বলবনা।" বলে শ্বশুরকে প্যান্টটা দিলাম। শ্বশুর প্যান্ট পরে চেয়ারে গিয়ে বসল। চোখে বাইনোকুলার লাগিয়ে ভূতের মেয়েদের দেখতে লাগল। আমার শ্বশুর বুড়ো হলে কি হবে, প্রতিদিন দু একটা ভূতের মেয়ে পটানো তার কাছে কোন ব্যাপার না। 

আমি শ্বশুরের পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। শ্বশুরকে বললাম: শ্বশুর মশায় আপনি আবারও ভূতের মেয়েদের দেখতেছেন?"

শ্বশুর বলল: আরে না, আমি তো এটা দিয়ে আমার রাজ্যটা দেখি। রাজা হিসেবে আমার একটা দায়িত্ব আছে তো,  আমার রাজ্যের ভূতগুলো কিভাবে চলাফেরা করতেছে, দেখতে হবেনা?"

আমি বিদ্রুপ করে জিজ্ঞেস করলাম: তা শ্বশুর মশায়, আপনার পুরো ভূতের রাজ্য কি শুধু ঐ ভূতের মেয়ে গুলোর দিকে?"

শ্বশুর থতমত খেয়ে বলল: তা হবে কেন?"

আমি বললাম:- শ্বশুরমশায়, আমি আপনার সম্পর্কে আরো একটা কথা শুনেছি।

--কি কথা?

--আপনি পেচীকে চিনেন?

--হ্যা চিনি।

--ও একটা ডিম পেড়েছে। ঐ ডিমে নাকি আপনার বাচ্চা ছিল। আমি ডিমটা ভেঙে দিছি।

--এই চুপ কর। এটা কেউ জানলে আমার সর্বনাশ হয়ে যাবে। এটা কাউকে বলবেনা।

--ঠিক আছে বলবনা। কিন্তু বিনিময়ে আমি কি পাব?

--যা চাও,  তাই পাবে।

--তাহলে শ্বশুর মশায়, আমি চাই আপনি আমাকে আজ রাতেই পৃথিবীতে পৌছে দিয়ে আসবেন।"

শ্বশুর মশায় একবারও না ভেবে বললেন:  

--ঠিক আছে।"

শ্বশুর মশায় হয়তো ভাবল, আমি এখানে থাকলে তার নিজেরই সর্বনাশ হবে। তাই রাজি হয়ে গেল। আমিও খুশি হলাম। আজ রাতেই আসবে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। আমি আবার পৃথিবীতে যেতে পারব। খুশিমনে আমি ঘরে ঢুকলাম। কিন্তু ভেতরে শাঁকচুন্নিকে দেখে আমার খুশি উবে গেল। সে আমার বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে আদর করতেছে। আমাকে দেখে বাচ্চাটাকে বিছানায় রেখে দরজা আটকায় দিল। তারপর আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলল বিছানায়। সে আমার উপর উঠে বলল: এই রানা, আজ সারাদিন তোমার সাথে প্রেম করব।" 

আমি পাম্প দেয়ার জন্য বললাম: 

--আমারও এতদিন খুব ইচ্ছে ছিল তোমার সাথে প্রেম করার। আমার বিয়েটা যদি তোমার আপুর সাথে না হয়ে তোমার সাথে হতো....

শাঁকচুন্নি লজ্জা পেয়ে বলল: আমরা তো পৃথিবীতে গিয়ে বিয়ে করব। তারপর তোমার আশা পূরণ হবে। এই, তুমি কি দেখে আমার প্রেমে পড়েছ বলনা?"

শালি বলে কি? আমি নাকি ওর প্রেমে পড়েছি!!!!!! তবু পাম্প দেয়ার জন্য বললাম: তোমার রূপ দেখে, তোমার মতো রূপসী মেয়ে, থুক্কু,,, রূপসী ভূতের মেয়ে আমি আর দেখিনি।"

শাঁকচুন্নি খুশি হয়ে বলল:--তাই  নাকি? এই আমি কি তোমার বউ এর চেয়ে সুন্দর?"

বললাম:- তুমি আমার বউ এর চেয়ে হাজারগুণ বেশি সুন্দর।  আজ সুন্দরী প্রতিযোগীতায় ও না গিয়ে তুমি গেলে পুরস্কারটা নিশ্চিত তুমি পেতে।"

শাঁকচুন্নি হঠাৎ অভিমান করে বসল। 

আমি জিজ্ঞেস করলাম: কি হয়েছে?"

ও বলল: আমি রাগ করেছি। আমি যে আমার আপুর চেয়ে সুন্দরী, তুমি এটা আগে বলনি কেন? তাহলে তো সুন্দরী প্রতিযোগীতায় আমিও যেতাম। ইস! নিশ্চিত পুরস্কারটা হাতছাড়া হয়ে গেল!

শালির মনটা ভালো করার জন্য বললাম: 

--আরে শালি, আজ যদি তুমি ওখানে যেতে তাহলে আজ আমাকে এভাবে এত কাছে পেতে?"

শালি খুশি হয়ে বলল: ও তাইতো, চল আজ ঘুরতে যাব আবার।"

অনিচ্ছা স্বত্তেও ওর সাথে ঘুরতে বের হলাম। বাচ্চাটা আমার শ্বশুর মশায় এর কোলে তুলে দিলাম। 

সারাদিন ঘুরে সন্ধ্যায় ফিরে আসলাম।  শ্বশুরের ঘরে ঢুকলাম।  শ্বশুর তখন হেডফোন লাগিয়ে মোবাইলে গান শুনতেছে। বুঝলাম,  এগুলোও নিশ্চয়ই কোন মানুষকে ভয় দেখিয়ে নিয়ে এসেছে। 

শ্বশুর আমাকে দেখে বলল: ও রানা, এসো,,, দেখ এই মোবাইলটা, এটা অনেকদিন গবেষণা করে আজ বানায়ছি আমি। শুনেছি, তোমাদের মনুষ্য জগতে বিজ্ঞানীরা অনেক কিছু আবিষ্কার করে। ভূতের রাজ্যে আমিই প্রথম ও একমাত্র ভূত বিজ্ঞানী।"

শালার শ্বশুর কত্ত বড় চাপাবাজ! মানুষকে ভয় দেখিয়ে মোবাইল নিয়ে এসে এখানে ভূত বিজ্ঞানী হয়ে গেছে। হাসব নাকি কাঁদব? ইচ্ছে হল ফুলা মানচিত্রে একটা জোরে লাথি মারি।

মনের ইচ্ছেটা মনে কবর দিয়ে বললাম: শ্বশুর মশায় আমাকে একটু পরে পৃথিবীতে নিয়ে যাবেন, নইলে কিন্তু সবাইকে সব বলে দেব।"

শ্বশুর বলল: ঠিক আছে, ঠিক আছে, আগে বল আমার মোবাইল আবিষ্কার টা কেমন হয়েছে?"

আমি বললাম: শ্বশুর আপনার মতো বিজ্ঞানী পৃথিবীতেও নেই।" মনে মনে বললাম, আসলেই নাই তো এরকম চোর, চাপাবাজ বিজ্ঞানী। 

আমার পাম্প শুনে শ্বশুর বলল: বাহ, আমি তোমার প্রতি খুশি হলাম। আমার প্রতিভার কদর বুঝ তুম। যাও এবার রেডি হয়ে আস, তোমাকে পৃথিবীতে নিয়ে যাব এখন।"

মনে মনে বললাম: শালার চাপাবাজ, সারাদিন ভূতের মেয়েদের বগিটিজিং করে করে মোবাইল তৈরী করলি কখন?

রুমে এসে দেখলাম আমার প্রিয়তমা বউ সুন্দরী প্রতিযোগীতা করে ফিরে এসেছে খালি হাতে। মন খারাপ তার। জিজ্ঞেস করলাম: কি হয়েছে বউ?

বউ বলল: আমি সুন্দরী প্রতিযোগিতায় চান্স পাইনি, আমি নাকি সুন্দর না, আমাকে প্রতিযোগীতা করতেও দেইনি।

--ও কিছুনা, আমি তোমাকে পৃথিবীতে নিয়ে গিয়ে ফেয়ার এন্ড লাভলী কিনে দেব। ৭ দিনে সুন্দরী হয়ে উঠবে।

--পৃথিবীতে? হুমম... তুমি চলে যাও,  পৃথিবীতে,  বাবার সাথে একটু আগে তোমার কি কথা হয়েছে আমি সব শুনেছি। তুমি আসলে কখনো আমাকে ভালোবাসনি। সুন্দরী বলে বলে কেবল আমাকে পাম্প দিয়েছ। আর আমিও বোকার মতো বিশ্বাস করেছি। আমি আসলে তোমার মনে জায়গা করতে পারিনি। ভূতের মেয়ে বলে আমার সাথে সংসার করা তোমার রুচিতে বাধে। আমার সাথে আর সংসার করতে হবেনা। আমি তোমাকে পৃথিবী থেকে এখানে নিয়ে এসেছি। আজ আমিই তোমাকে পৃথিবীতে রেখে আসব।"

ওর কথাগুলো হঠাৎ খুব করুণ শুনাল। কিন্তু তার ইমোশনাল কথায় গলে গেলে হবেনা। আমাকে পৃথবীতে যেতে হবে। আমি বললাম: বউ, মন খারাপ করোনা, দেখ আমি মানুষ, আর তুমি ভূত। আমাদের মাঝে সংসার করা মানায়না। তার চেয়ে বরং আমি চলে যায় পৃথিবীতে।"

--হুমমম....চল।"

সেই রাতেই বউ আমাকে পৃথবীতে নিয়ে আসল। ঠিক যেখান থেকে আমাকে তুলে নিয়ে গেছে, সেখানে আসলাম আমরা। পাশে সিনেমাহল। মানুষ সিনেমাহলে ঢুকছে, আর বের হচ্ছে। আহহহ!!!! অনেকদিন পর পৃথিবী দেখলাম। পৃথিবীর মানুষগুলো দেখলাম। পরাণে প্রাণ ফিরে এল,  থুক্কু, , পরাণে শান্তি ফিরে এল। বউ হঠাৎ আমাকে এক হাতে জড়িয়ে ধরল। অন্য হাতে বাচ্চাটা। হু হু করে কেঁদে উঠল সে। এই প্রথম তাকে কান্না করতে দেখলাম। একটুপর আমাদের বিদায় হবে। তাকে শান্তিতে কাঁদতে দিলাম। কিছুক্ষণ কান্না করে সে মুখ তুলল। অশ্রুতে তার ভেজা চোখ দুটি ঝলঝল করে উঠল।

কাঁদতে কাঁদতে সে বলল: তুমি আমাকে ভালোবাসনি তাতে কি, আমি তো তোমাকে ভালোবেসেছি। শুধু একটাই আফসোস আমার, কেন যে মানুষ হয়ে জন্ম হলনা আমার? তাহলে আজ তোমাকে এভাবে হারাতে হতনা আমার। যাক,  তুমি কাছে না থাকলেও তোমার একটা স্মৃতি তো আমার কাছে আছে। এই তোমার বাচ্চাটাকে দেখে দেখে আমি তোমাকে সারাজীবন মনে রাখব। ভুলবনা কখনো।"

এই প্রথম আমার খুব কষ্ট হল ওর জন্য। কিন্তু তাকে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা আমার জানা ছিলনা। কি বলব বুঝতেছিনা। হঠাৎ আমার বন্ধু রকি এসে বলল: কি রে এভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?"

আমি রকিকে অনেকদিন পর দেখলাম,  সেও আমাকে অনেকদিন পর দেখল। কিন্তু তার কথায় মনে হলনা যে সে আমাকে অনেকদিন পর দেখেছে। আমি বললাম: রকি, ও আমার বউ...."

রকি অবাক হয়ে বলল: কে তোর বউ, এখানে তো কেউ নেই। তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? আর তুই বিয়েই বা করলি কখন?"

আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। আমার বউ বলল: রানা, আমাকে তুমি ছাড়া আর কেউ দেখবেনা।"

রকি আমাকে বলল: চল, বাসায় চল...."

আমার বউ বলল: যাও, আর কখনো কথা হবেনা আমাদের। আমিও আর কখনো পৃথিবীতে আসবনা। ভালো থেকো তুমি।"

--কিরে চল...." রকি আমাকে টানতে লাগল। 

--আজকের মুভিটা খুব জোশ হয়েছে না?" রকি জিজ্ঞেস করল।

--হু??? কোন মুভি???" অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম।

--আরে একটু আগে যে আমরা দেখলাম "তোর নাম" মুভি টা....

--কি?? একটু আগে?? তাড়াতাড়ি আমি মোবাইলে টাইম দেখলাম। মাত্র ১০ মিনিট হয়েছে আমি সিনেমাহল থেকে বের হয়েছি, অথচ আমি ভূতের রাজ্যে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ছিলাম। খুব অবাক হলাম ভূতের রাজ্যের এক বছর পৃথিবীর মাত্র ১০ মিনিটের সমান। মাথায় কিছুই ঢুকছেনা আমার। অনেকদূর চলে এলাম আমরা। একবার পেছনে ফিরে তাকালাম।  দেখলাম,  আমার বউ বাচ্চাটাকে বুকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। হয়তো এখনও কান্না করতেছে সে আমাদের দিকে তাকিয়ে। আমাকে পেছনে তাকাতে দেখে সে হাত নেড়ে বিদায় জানাল। খুব ইচ্ছে হল তখন আমার, ওর সাথে আবার ভূত রাজ্যে ফিরে যেতে। ওর সাথে সংসার করতে। কিন্তু আমার ভবিষ্যৎ চিন্তা করে ঘুরে দাঁড়ালাম। রকির সাথে হাটতে লাগলাম। আমিও হয়তো তাকে কখনো ভুলতে পারবনা।

#পেত্নীর_সাথে_ঘর_সংসার_পর্ব_৪

সকালে ঘুম ভেঙেছে অনেক্ষণ হয়েছে আমার। তবুও ঘুমের ভান করে থাকলাম।  কারণ আজ শাঁকচুন্নির সাথে ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল। আমার কোন ইচ্ছে নেই ওর সাথে ঘুরতে যাওয়ার। একটু পর শাঁকচুন্নি এল। আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে বলল: দুলাভাই উঠেন।"

আমি ভাবলাম, এই সুযোগ একটা থাপ্পড় মারার। ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দিলাম শাঁকচুন্নির গালে। সে "দুলাভাই" বলে চিৎকার করে উঠল। আমি তাড়াহুড়া করে উঠে বসলাম। বললাম: কি? কি? হয়েছে?

--আমাকে থাপ্পড় মারলেন কেন?

--হয়তো ঘুমের ঘোরে মশা মারতে গিয়ে তোমাকে মেরেছি, কিছু মনে করোনা, লক্ষী শালী আমার।" ওর গাল দুইটা টেনে দিলাম। লজ্জা পেয়ে সে বলল: যাহ দুলাভাই আমি কিছু মনে করিনি, আমি তো চড়টা ভালোবাসা হিসেবে গ্রহণ করেছি।"

আমি বললাম: ও তাই? তাহলে ওরকম করে আরেকটা চড় দিই?

--দিবেন?" বলার সময় শালির গলা কেঁপে উঠল।

--হ্যা, দেব....

--দেন তাহলে...." চোখ বন্ধ করল সে। আমি আরো জোরে একটা থাপ্পড় মেরে জিজ্ঞেস করলাম: শালি, ভালোবাসা টা কেমন?"

শালি চোখে পানি নিয়ে বলল: হ্যা দুলাভাই অনেক ভালো। চলেন এবার বের হব। 

--হুমমম,  চল.....

ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে বের হলাম শালির সাথে। শালিকে বললাম: শালি, আমার হাতটা ধর, আমি চোখ বন্ধ করে হাটব। 

--কেন দুলাভাই?" জিজ্ঞেস করল সে।

বললাম: যাবার সময় ল্যাংটা কেউ চোখে পড়লে যাত্রা অশুভ হয়।"

আমার শ্বশুর তখন পাশে একটা চেয়ারে বসে পায়ের উপর পা তুলে দিয়ে তার খানদানি দায়িত্ব পালন করতেছে চোখে বাইনোকুলার লাগিয়ে। প্রতিদিন ভূতের মেয়েদের বগিটিজিং করা,  তার একটা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে কিনা। আমার কথাটি শুনে শ্বশুর ক্ষেপে উঠল। বাইনোকুলারটা চোখ থেকে নামিয়ে বলল: ঐ ঘর জামাই, এদিকে আয়।"

আমি চোখ বন্ধ অবস্থায় শ্বশুরের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। শ্বশুর গর্জন করে বলল: ঐ চোখ খোল....."

বললাম: শ্বশুর মশায়, আপনি আপনার মানচিত্রে হাত দেন। তাহলে আমি চক্ষুদ্বয় খুলিতে পারি।"

--ঐ চোখ খুলতে বলছি।" শ্বশুরের গলার আওয়াজ আরো বেড়ে গেল।

আমি ভয়ে ভয়ে চোখ খুললাম। দেখলাম শ্বশুর একটা চেয়ারে দাঁড়িয়ে আছে, আর তার মানচিত্রটা আমার চোখ থেকে মাত্র পাঁচ ইঞ্চি দূরে। ইচ্ছে হয়েছিল, একটা কামড় দিয়ে বেটার টায়ার পাম্পচার করে দিই। শ্বশুর চেয়ার থেকে নেমে বলল: খুব কাছ থেকে আমার সৌন্দর্য দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছ তুমি। এবার যাও, যাত্রা তোমার শুভ।"

মনে মনে অনেক গালি দিলাম শালার শ্বশুরকে। তারপর বেরিয়ে পড়লাম। যেতে যেতে শালিকে বললাম: শালি, তোমার আপু বাড়ি ফেরার আগেই কিন্তু আমাদের ফিরতে হবে, নইলে বুঝতেই তো পারছ, তোমার একদিন কি আমার দশ থেকে বার দিন করে ছাড়বে।"

--ঠিক আছে দুলাভাই।"

ঘুরতে ঘুরতে আমরা অনেকদূরে চলে এলাম। হঠাৎ চোখে পড়ল কিছু অন্যরকমের ভূত। তাদের পেছনে গরুর মতো একটা করে লেজ আছে। একটা ভূতের মেয়েকে দেখলাম একটা গর্তে অদ্ভুতভাবে বসে আছে লেজটা উপরে তুলে। এ কি কান্ড! এ মেয়েটা দেখছি পরিবেশ দূষণ করতেছে। শালিকে জিজ্ঞেস করলাম: শালি এরা কি গর্তে টয়লেট করে?"

শালি হেসে বলল: আরে দুলাভাই না, এরা গর্তে ডিম পাড়ে। এরা অন্যজাতের ভূত। এদেরকে বলে ডিম্বাভূত।"

শালির কথা শুনে আমার টাসকি খাওয়ার মতো অবস্থা। মাথা ঘুরে পড়ে যেতে চাইলাম, ভাগ্যিস  শালি আমাকে ধরে ফেলল।

একটু পর লেজ নামিয়ে ঐ ভূতের মেয়েটা উঠে এল গর্ত থেকে। আমাদের সামনে এসে বলল: আরে শাঁকচুন্নি, তুমি হঠাৎ এখানে? 

শাঁকচুন্নি বলল: পেচী, এটা আমার দুলাভাই।  তুমি তো জান আমার আপু মানুষ বিয়ে করেছে।"

পেচী বলল: ও দুলাভাই! হাউ সুইট।"

আমি বললাম: ও শালি, তুমি দেখছি ইংরেজি জান? 

--ঐ আর কি, তোমাদের জগতে গিয়ে দু একটা ইংরেজি শিখেছি। 

--বাহ! বাহ! চমৎকার! তো শালি, ডিম তো পেড়েছ, ডিমটা একটু দেখি।"

পেচী আমাদেরকে গর্তের কাছে নিয়ে গেল। দেখলাম আমাদের ফুটবলের চেয়েও বড় একটা ডিম। পেচীকে জিজ্ঞেস করলাম: শালি, এ ডিম থেকে বাচ্চা বের হবে কবে?

পেচী বলল: দশদিন লাগবে। আর আমরা প্রতিবছরে একটা করে ডিম পাড়ি।

আমি বললাম: বাহ! বাহ! তো শালি এবার একটা প্রশ্ন করি?

--জি করেন.....

--আচ্ছা বলতো, ডিম আগে নাকি আন্ডা আগে,  থুক্কু,,  ডিম আগে নাকি ভূত আগে?

প্রশ্ন শুনে পেচী চিন্তায় পড়ে গেল। একবার বলল ডিম আগে, আরেকবার বলল ভূত আগে। আমি বললাম: শালি তুমি ভাবতে থাক, আর আমি তোমার ডিমটা একটু হাতে নিয়ে দেখতে পারি?

পেচী তার ডিমটা তুলে নিয়ে আমার হাতে দিল। আমি একটু নড়াচড়া করে ইচ্ছে করে ডিমটা হাত থেকে ফেলে দিলাম। ঠাস করে একটা শব্দ হল। পেচী চিৎকার করে উঠল: হায়! হায়! দুলাভাই আপনি এটা কি করলেন?

বললাম: আসলে এতবড় ডিম কখনো হাতে নিইনি তো, তাই হাত ফসকে পড়ে গেল।

শাঁকচুন্নি বলল: পেচী কিছু মনে করোনা, দুলাভাইর ভুল হয়ে গেছে।

পেচী বলল: ঠিক আছে, কিছু মনে করলামনা।

 আমি শাঁকচুন্নিকে  বললাম: দেখছ,  আমি বলেছিলামনা, বের হওয়ার সময় ল্যাংটা কেউ চোখের সামনে পড়লে যাত্রা অশুভ হয়?" মনে মনে বললাম: যাইহোক,  ডিমটা ভেঙে একটা ভূতের বাচ্চা তো কমিয়ে দিলাম।"

পেচী জিজ্ঞেস করল: ল্যাংটা কে? আপনার শ্বশুর নাকি?

--হ্যা, পুরো ভূত রাজ্যে উনি ছাড়া আর কেউ ল্যাংটা আছে নাকি?"

পেচী আমাকে একপাশে টেনে নিয়ে গিয়ে ফিসফিস করে বলল: দুলাভাই,  ঐ ডিমের ভেতর কার বাচ্চা ছিল জানেন?"

আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম: কার?"

--আপনার শ্বশুরের।

--কি???" অবাক হওয়ার ভান করলাম। শ্বশুরের যা চরিত্র,  তাতে এটা অস্বাভাবিক কিছু না।

পেচী বলল: হ্যা দুলাভাই,  উনি গতবছর এখানে এসেছিলেন। আমার দিকে কুদৃষ্টি দিয়েছিল। আমাদের রাজা বলে কিছু বলতে পারিনি।"

যাইহোক,  এখানে এসে একটা তথ্য পেলাম। শ্বশুরকে এবার নাচাতে পারব।

শাঁকচুন্নিকে নিয়ে বাসায় ফিরলাম,  দেখলাম এন্জেল ভূত্নী আমাদের আগেই ফিরেছে। আমাকে টেনে রুমের ভেতর নিয়ে গেল। দরজা আটকায় দিয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়াল। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। বউ গর্জন করে উঠল: ঐ তোর বউ আমি নাকি শাঁকচুন্নি?

বললাম:- ছি ছি, শাঁকচুন্নি আমার বউ হতে যাবে কেন??"

--তাহলে তুই সারাদিন ওর সাথে কি??

--তুমি তো থাকনা, তাই ওর সাথে একটু ঘুরি, এতে রেগে যাওয়ার কি আছে? 

--ঠিক আছে, কাল থেকে আমি থাকব। তুমি আর শাঁকচুন্নির সাথে যাবেনা বল? 

--ওকে, যাবনা..." বলে বউকে কাছে টেনে নিলাম। একটা কিস করতে চাইলাম মনের জোরে। বউ লজ্জা পেয়ে বলল: তুমি না দিন দিন খুব দুষ্ট হয়ে যাচ্ছ।  সুন্দরী বউ পেয়েছ বলে কি যখন তখন এসব করতে হবে? আমার লজ্জা করে,  তুমি জাননা?"

মনে মনে বললাম: ওরে, কেমন সুন্দরী বউরে আমার! ছাড়তে পারলেই বাঁচি। মুখে বললাম: হুমম, এত সুন্দরী বউ আমার, লোভ কি সামলানো যায় বল?" বলে আবারো কিস করতে গেলাম। 

--যাহহ দুষ্ট..." বলে বউ আমাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিল। তারপর হাসতে হাসতে দৌড় দিল। বুঝলাম বউ আমার লজ্জা পেয়েছে। ও চলে যাওয়ার পর দরজা বন্ধ করে দিলাম। হঠাৎ শুনলাম "কুয়া কুয়া"। উফ!! এই পিচ্ছি আপদটা আর গেলনা। ওকে কিছু করতে গেলেও স্বপ্নে এসে ভয় দেখায়। মনে মনে ভূতের ২৮ গোষ্ঠীকে উদ্ধার করে কানে হাত চেপে ঘুমিয়ে পড়লাম।

(চলব....পাঠকগন?)😊

#পেত্নীর_সাথে_ঘর_সংসার_পর্ব_৩

ভূতের রাজ্যে আসার পর দিন দিন যেন কুড়ে হয়ে যাচ্ছি।  কোন কাজ করতে হয়না। তাই ভাবলাম শুধু শুধু বসে না থেকে একটা কাজ করলে কেমন হয়, আমার ল্যাংটা শ্বশুরের জন্য একটা প্যান্ট সেলাই করি। আসলে শ্বশুরকে ল্যাংটা দেখলে আমার কেমন জানি লাগে। পা দুইটাকে সামলাতে কষ্ট হয়। পা দুইটা শ্বশুরকে লাথি মারার জন্য হিশফিশ করে।

যেই ভাবা সেই কাজ, বাসায় যখন কেউ থাকতনা তখন ছেড়া কাপড় জোড়া লাগিয়ে একটা প্যান্ট বানাতাম।  কয়েকদিন লাগল প্যান্টটা বানাতে। এখন এটা শ্বশুরকে পরাতে হবে। শত হলেও সে আমার শ্বশুর।  একটা খানদানি ছেলের শ্বশুর ল্যাংটা থাকে,, ছি ছি! লজ্জায় মাথা কেটে যায়। আমি এখানকার সবকিছু আমার মোবাইলে ভিডিও করলেও শ্বশুরের কোন কার্যকলাপ ভিডিও করতামনা। যদি কখনো এখান থেকে  ফিরে যায় বন্ধুরা এটা দেখে হাসাহাসি করে বলবে: কিরে তোর শ্বশুরের মানচিত্র দেখা যায় কেন?" বন্ধুদের এমন ঠাট্টায় তখন কোথায় যাবে আমার খানদানি মর্যাদা?

যাইহোক, প্যান্টটা তৈরি করে আমি শ্বশুরকে খুঁজতে লাগলাম।  দেখলাম আমার শ্বশুর খানদানি স্টাইলে বসে কিছুটা দূরে তাকিয়ে আছে। আমিও শ্বশুরের দৃষ্টি অনুসরণ করে তাকালাম, দেখলাম কয়েকটা সুন্দরী ভূতের মেয়ে (দেখলে বমি আসে) সেখানে বসে আছে। আর আমার শ্বশুর চোখে বাইনোকুলার লাগিয়ে তাদেরকে "বগিটিজিং" করতেছে। এই বাইনোকুলারটা কয়েকদিন আগে আমার শ্বশুর মানুষদের ভয় দেখিয়ে নিয়ে এসেছে ভূতের মেয়েদের ভালো করে দেখার জন্য।  আমাদের জগতে হলে এতদিনে  ইভটিজিং এর দায়ে এর হাড়গোড় আস্ত রাখতনা। শালার ভূতের রাজ্যে কোন আইনকানুন নেই। স্বয়ং ভূতের রাজা পর্যন্ত বগিটিজিং করতেছে।

শ্বশুরকে এমন মহান কাজে ব্যস্ত দেখে ভাবলাম, আহারে বেচারার বুঝি তার মৃত বউ এর কথা খুব মনে পড়তেছে। তাই এখন আরেকটা বিয়ে করে আরো ৬৮ টা ভূত উৎপাদন করার জল্পনাকল্পনা করতেছে। 

আমি কাছে গিয়ে ডাকলাম: শ্বশুর মশায়...."

শ্বশুর তার কাজে এতটাই ব্যস্ত যে আমার কথা তার কানে গেলনা। আমি তখন ভাবলাম শ্বশুরকে একটা সারপ্রাইজ দিই। প্যান্টটা তাকে পরিয়ে চলে যায়, পরে যখন দেখবে তখন খুশি হয়ে আমাকে একটা ধন্যবাদ দিলেই হবে। 

আমি প্যান্টটা শ্বশুরকে পরিয়ে ঘরে এসে শুইলাম।  পাশে আমার বউ এর বাচ্চাটা কুয়া কুয়া করতেছে, আমি দু'হাত দিয়ে কান চেপে চোখ বুজলাম। একটু পর তন্দ্রা নেমে এল চোখে। ঘুমের ঘুরে স্বপ্ন দেখলাম, আমার বউ এর বাচ্চাটা আমাকে টানতে টানতে কোথায় যেন নিয়ে যাচ্ছে।  একটা পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে আসল সে আমাকে। তারপর আমাকে বলল: ঐ তুই আমার বাপ বলে স্বীকার কর। নইলে তোরে এখান থেকে ফেলে মেরে ফেলব। আমি ভয়ে ভয়ে বললাম, আরে লক্ষী সোনা, আমি ছাড়া তোর কে বাপ আছে বল?"

--হুমমম, মনে থাকে যেন।" আমার বাচ্চাটা আমাকে ছেড়ে দিল। ধড়পড় করে আমি ঘুম থেকে উঠতে চাইলাম। কিন্তু দেখলাম, আমার শালি এন্জেল শাঁকচুন্নি শুয়ে আছে আমার বুকে। আমি একটু কড়া করে বললাম: তুমি আমার ইজ্জত খাবে নাকি?" 

শাঁকচুন্নি কাঁচুমাচু করে বলল: বাবুকে কুয়া কুয়া করে কান্না করতে দেখে এখানে আসলাম।  এসে দেখলাম তুমি ঘুমের ঘোরে কাঁপতেছ, তাই তোমার বুকে শুয়ে একটু উষ্ণ করে দিলাম।"

শালির কথা শেষ হতেই পাশ থেকে বাচ্চাটা কুয়া কুয়া করে উঠল। ইচ্ছে হল তাকে গলা টিপে মেরে ফেলি, আমাকে স্বপ্নে এসে ভয় দেখানোর মজা বুঝিয়ে দিই। পরে নিজেকে সামলালাম। এটা আমার ছোট পরিবার পরিকল্পনার প্রথম সদস্য।  এর সিরিয়াল ধরেই বাকি ৩৪ টা আসবে। এটাকে মারলে আমার বউ আমার আস্ত রাখবেনা।

হঠাৎ বাইরে চেঁচামেচি শুনা গেল। আমার শ্রদ্ধেয় শ্বশুর চিল্লাচিল্লি করে ভূত রাজ্যটা মাথায় তুলে ফেলতেছে। বুঝতে পারলাম আসল ঘটনাটা কি। আমি ভয়ে বের হলামনা। কিন্তু শ্বশুর নিজেই এলেন আমার ঘরে। প্যান্টটা তার হাতে, আর তিনি ল্যাংটা। যে মানচিত্রটা না দেখার জন্য এতদিন কষ্ট করলাম, সেটা আবার দেখতে হল। মাথার উপর খানদানি রাগ উঠে গেল আমার। ইচ্ছে হল শ্বশুরের মানচিত্রের উপর ব্লেড দিয়ে কেটে আমাদের বাংলাদেশটা চিহ্নিত করি। আগেই বলেছি, এখানে আমি অসহায়।

শ্বশুর রেগেমেগে এল আমার কাছে, বলল: ঐ , তুই আমারে এটা কি পরালি?

আমি বললাম: আরে শ্বশুর মশায়, আপনাকে প্যান্টটাতে অনেক মানায়ছিল, তাই এটা পরালাম।"

কে শুনে কার কথা। আমার শ্বশুরের রাগ আরো বেড়ে গেল। ভাগ্যিস, এই মুহূর্তে আমার বউ এসে আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। 

শ্বশুর চলে যাবার পর বউ আমার বুকে মাথা রাখল। মুখটা তার কালো। বুঝলাম লজ্জা পেয়েছে। বউ বলল: ওগো শুননা, আমি সুন্দরী ভূত্নী প্রতিযোগীতায় অংশ নেয়ার জন্য সব ব্যবস্থা করে এলাম।"

--ওহহ, তাই নাকি? লক্ষী বউ আমার, সোনা বউ আমার। (মনে মনে বললাম, রেহাই দে বউ আমার)

বউ বলল: যাহহ দুষ্ট, এভাবে বলোনা, আমার লজ্জা করেনা বুঝি?"

--ওরে আমার লজ্জাবতী বউরে, তুমি এখানে প্রতিযোগীতায় প্রথম হলে, আমি তোমাকে পৃথিবীতে নিয়ে যাব প্রতিযোগীতা করার জন্য।"

বউ হঠাৎ রেগে তেলেবেগুনে চ্যাৎ করে উঠল। বলল: কি বললা তুমি?  আবার তুমি পৃথিবীতে যেতে চাও?"

বউকে এভাবে ফোস করে উঠতে দেখে ভয় পেয়ে গেলাম। বললাম: না মানে, আমি যাবনা, তোমাকেই পাঠাব মানুষের সাথে প্রতিযোগীতা করার জন্য।

--ওহ তাই বল।" বউ আমার আবারও লজ্জা পেয়ে বলল: ওগো তুমি দেখ,আমি পৃথিবীতেও প্রথম হব। তুমি তো বলেছ আমি খুব সুন্দরী। ওগো তুমি নিশ্চয়ই খুব খুশি এমন সুন্দরী বউ পেয়ে?"

--হ্যা বউ আমি খুব খুশি।" জোর করে বললাম কথাটি। মনে মনে আমি কেঁদে ফেললাম। মনের চোখ দিয়ে অবিরাম জল ঝরতেছে আমার। বউ এর সামনে তো আর কান্না করা যাবেনা। তাই মনে মনে যত পারি কান্না করি। 

--আমিও খুব খুশি। এত সুন্দর একটা স্বামী পেয়ে।" বউ বলল।

আমি বললাম: আমি কিন্তু আমার বউ এর মতো এতটা সুন্দর না। আমার বউ তো একটা পরী।" কথাগুলো বলার সময় মনে হচ্ছিল কেউ বুঝি আমার মুখে হাতুড়ি দিয়ে মারতেছে।

বউ আমার কথা শুনে মুখটা এত বেশি কালো করে ফেলল, বুঝলাম সে অনেক বেশি লজ্জা পেয়েছে। 

--ওগো, তুমি না খুব দুষ্ট।" বউ বলল।

--কাছে আস, আরেকটু দুষ্টামি করি।" পাম্প দেয়ার জন্য বললাম।

--যাহহহ দুষ্ট ছেলে।" বউ আমার লজ্জা পেয়ে দৌড় দিল। 

আমি দরজা বন্ধ করে হু হু করে কেঁদে ফেললাম।  পাশ থেকে তখন আমার বউ এর বাচ্চাটা কুয়া কুয়া করে উঠল। যেন আমাকে ভেঙ্গাতে শুরু করেছে। ইচ্ছে হল তুলে একটা আছাড় মারি। হায়রে! যতদিন যাচ্ছে, আমার  জগতে ফিরে যাওয়ার আশা ততই ম্লান হয়ে হচ্ছে। জগতে ফেরা বুঝি হবেনা আমার।

[[চলবে...তো পাঠকেরা 🙄 ]]